ময়মনসিংহে বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা : মূল আসামি গ্রেফতার

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ফসলি জমি থেকে গলাকাটা অজ্ঞাত লাশের পরিচয় মিলেছে। এঘটনায় মূল আসামি নান্দাইলের কালিয়া পাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আবুল হাসান (৩৫)কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পিবিআই জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অনুমান ৩০০ ফুট দূরে অজ্ঞাতনামা পুরুষ বয়স অনুমান ৭৩ বছর এর গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া যায়। এঘটনায় পিবিআই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে। প্রথমে অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির ফিঙ্গার ফ্রিন্টের মাধ্যমে  মৃতের নাম মো. ফজলুল হক (৭৩) জানা যায়। ওই নিহত ব্যক্তির বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার তেলিয়া গ্রামে। তারপর প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি আবুল হাসানকে নরসিংদীর মাধবদী থানার ফুলতলা গ্রামের জনৈক চাঁন মিয়ার ভাড়া বাসা হতে গ্রেফতার করে এবং আসামীর নিকট হতে লুন্ঠিত ত্রিশ হাজার টাকার মধ্যে নগদ আট হাজার টাকা, দুইটি মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড ও মৃতের কাপড় সহ ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করে। পরে আসামীর স্বীকারোক্তি মতে নান্দাইল এলাকার ঘটনাস্থলের পাশের ধান ক্ষেত হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার হয়। ইতোমধ্যে উক্ত ঘটনায় নান্দাইল থানাধীন কালেঙ্গা গ্রামের চৌকিদার মজিবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নান্দাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৬, তাং-২৮/০৯/২০২১।

পিবিআই আরও জানায়, মৃত ফজলুল হক তার স্ত্রী সন্তানসহ শ্বশুর বাড়ীতে থাকতেন। গত অনুমান সাত বছর পূর্বে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হলে একাই তার নিজ বাড়ী নরসিংদী সদর থানাধীন খাটেহারা পূর্বপাড়ায় বসবাস করতে থাকেন। হত্যাকারী আবুল হাসান ফজলুল হকের বাড়িতে স্ত্রী নাজমিন আক্তারকে নিয়ে দেড় বছর যাবত ভাড়া থাকত। ভাড়া থাকার সুবাদে ফজলুল হক এর সাথে আবুল হাসানের সুসম্পর্ক হয়। হত্যাকারীর স্ত্রীর সিজারের জন্য টাকার প্রয়োজন হলে সে ফজলুল হকের নিকট হতে সাত হাজার টাকা ধার নেয়। হত্যাকারীর ধারণা ফজলুল হকের নিকট অনেক নগদ টাকা-পয়সা থাকে। সেই ধারণা থেকে আবুল হাসান আবারো টাকা ধার চাইলে ফজলুল হক টাকা দিতে অস্বীকার করে। হত্যাকারী আবুল হাসান এতে ফজলুল হকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় এবং পুরো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। পরবর্তীতে কৌশলে ফজলুল হককে হত্যাকারী তার নিজ বাড়ী নান্দাইলে বেড়াতে নিয়ে আসার পথে রাত অনুমান ০৭.৪০ মিনিটের সময় বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে ধান ক্ষেতের আইলে ফজলুল হককে ধারালো দা দিয়ে জবাই করে হত্যা করে এবং ঘটনাস্থলেই হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি ঢিল দিয়ে ধান ক্ষেতে ফেলে দেয়। ফজলুল হককে হত্যার পর হত্যাকারী আবুল হাসান মৃতের সাথে থাকা ত্রিশ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল নিয়ে পলাতক হয়।

Share this post

scroll to top