ময়মনসিংহে বারবার গ্রীড স্টেশনে আগুন : দুর্ঘটনা-ষড়যন্ত্র- না দায়িত্বে অবহেলা?

Bidduth২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আবারও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ময়মনসিংহের কেওয়াটখালি উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুরো ময়মনসিংহ বিভাগ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর একই গ্রীড স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু বারবার একই রকম ঘটনার সৃষ্টি হওয়ায় পুরো ময়মনসিংহ বিভাগের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। বিশেষ করে কেওয়াটখালি উপকেন্দ্রের আশপাশের লোকজন বেশি আতঙ্কিত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরপর ঘটে যাওয়া এধরনের ঘটনা কী নিছক দুর্ঘটনা না দায়িত্বে অবহেলা তা নিয়েও আলোচনা সমালোচনা চলছে। অনেকেই অভিযোগ তুলছেন পিজিসিবির বিরুদ্ধে। আবার অনেকেই মনে করছেন, কোন হীনস্বার্থ রক্ষায় কোন কুচক্ষী মহল এধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বা জড়িত থাকতে পারে। এজন্য জাতীয়ভাবে তদন্তের দাবি চেয়েছেন জেলার সচেতন মানুষ।

গত ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর কেওয়াটখালি এলাকার পিজিসিবির গ্রিড উপকেন্দ্রে ভয়াবহ আগুনে জাতীয় গ্রিডের ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন, ১৩২ কেভি ট্রান্সফরমার ও কন্ট্রোল রুমের সুইচ বোর্ডসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। এ সময় গ্রিড উপকেন্দ্রের ৩টি ট্রান্সফর্মারের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একদিন আগের ঘটনাকে যথাযথভাবে আমলে নিয়ে যদি কাজ করা হতো তবে আজ নতুন করে ভয়ানক আতঙ্কের সৃষ্টি হতো না। এজন্য পিজিসিবির কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উদাসিনতা ও অবহেলা একটি কারণ হতে পারে। অদক্ষ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে পরপর এঘটনা ঘটছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত।

সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দিনের ব্যভধানে এমন ঘটনায় উদ্ধেগ প্রকাশ করছেন। অনেকেই এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।

এদিকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম তাজুল ইসলাম খান জানান, এ ঘটনায় ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর জেলায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ জেলায় এখনো বন্ধ রয়েছে। এখানেও দ্রুত স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। কি কারণে এ ঘটনা ঘটল বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এ কে এম তাজুল ইসলাম খান।

এদিকে ৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহানের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা বুধবার দুপুরে সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত কাজ শুরু করেন। তিনদিনের মধ্যে এই কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট প্রদান করার কথা রয়েছে।

এছাড়াও পিজিসিবি নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন এন্ড মেইন্টেন্যান্স) মাসুম আলম বকশীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট অপর একটি তদন্ত কমিটিও তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।

তবে এই ঘটনায় জাতীয়ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সাথে জড়িতদের জাতীয় স্বার্থে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বিভাগ জুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

Share this post

scroll to top