ময়মনসিংহে ধর্ষণের পর গাছে অর্ধ উলঙ্গ লাশ : গ্রেফতার আরো ১ মাদ্রাসা ছাত্র

Mymenshingh Gaforgonময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাড়াভরাট এলাকায় মৃত তাকমিনা আক্তার (১৯) কে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে জাম গাছের ডালে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় লাশ ঝুলিয়ে রাখার অপরাধের মামলার আরও ১ আসামীকে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানা এলাকার নিয়ামতপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।

ময়মনসিংহ ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল গফরগাঁও থানার মামলা নং-১১ তারিখ ২৪/০৩/২০ খ্রিঃ ধারা-৩০২ পেনাল কোড এর হত্যা মামলার পলাতক আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম (১৮), পিতা-মোঃ সাইদুল ইসলাম, গ্রাম-উত্তর তারাপাশা, থানা-নান্দাইল, জেলা-ময়মনসিংহকে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানাধীন নিয়ামতপুর এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সহিত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উক্ত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং হত্যা মামলার ভিকটিম তাকমিনা আক্তার (১৯) কে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে। ধৃত আসামীর অপর সহযোগী আসামী মোঃ মাহাফুজুর রহমান ইছামুদ্দীন (১৮), কে গফরগাঁও থানা পুলিশ কর্তৃক গত ২৬/৩/২০ খ্রিঃ তারিখে এবং আসামী আশিকুল ইসলাম (১৯) কে গত ২৯/০৩/২০ খ্রিঃ তারিখে গফরগাঁও থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার করেছে। উক্ত আসামীদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌঃ কাঃ বি ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা তিনজনে মিলে ধর্ষণ করে এবং ভিকটিম তাকমিনাকে হত্যা করেছে স্বীকার করেছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট জানা যায়।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে গফরগাঁও থানা পুলিশ ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

আসামি মাহফুজের জবানবন্দি, নিহতের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পাড়াভরট জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম কওমী মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র মোঃ আশিকুল হকের সাথে একই গ্রামের  আব্দুল মতিনের কিশোরী কন্যা তাকমীনার প্রেমের  সম্পর্ক ছিল। আশিকুল হক নান্দাইল উপজেলার তারাপাশা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে। তাকমীনা আশিকুল কে বিয়ে  করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন রাত তিনটার দিকে আশিকুল তাকমীনাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসে। তাকমীনা বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর আশিকুল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।পরে আশিকুল তার দুই বন্ধু মাহফুজ ও আরিফের  সহযোগিতায় তাকমীনার গলায় পাগড়ী  পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পাড়াভরট জামে মসজিদের উত্তর পাশে জাম গাছে তাকমীনার অর্ধনগ্ন লাশ ঝুলিয়ে রাখে। কিছুক্ষণ পর ফজরের নামাজের সময় হলে  মসজিদের মুয়াজ্জিন আশিকুল আযান দেয় ও পরবর্তীতে ইমামতি করে। মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বের হয়ে  জাম গাছে লাশ জুলতে দেখে তাকমীনার বাড়িতে খবর দেয়। মঙ্গলবার বিকালে তাহমিনা পিতা বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে।

এদিকে তাহমীনার লাশের পাশে মোবাইল পড়েছিল। মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মাহফুজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মফিজ উদ্দিনের নামে রেজিস্ট্রেশন কৃত সিমটি ব্যবহার করত তারই ছেলে মাহফুজ।

Share this post

scroll to top