করোনা চিহ্নিত এলাকা হিসেবে ময়মনসিংহ শহরে এখন পর্যন্ত ৫০০ রোগী শনাক্ত হলেও করোনা টেস্টের জন্য প্রাথমিক তথ্য বিররণীতে দেওয়া ঠিকানা সঠিক না হওয়ায় ১৪০জনের ঠিকানাই জানেনা স্থানীয় প্রশাসন। এনিয়ে রীতিমত বেকায়দায় স্থানীয় প্রশাসন। আর এ নিয়ে শহরের সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরণের উদ্ধেগ ও আতংক বিরাজ করছে। হদিস হওয়া ১৪০ করোনা আক্রান্তের মধ্যে অনেকেই মোবাইল ফোন ধরছেন না। আবার মোবাইল রিসিভ করলেও নির্দিষ্ট ঠিকানা দিচ্ছেন না। যেকারণে ময়মনসিংহ নগরীতে ‘রেড জোন’ নির্ধারনে জটিলতা হচ্ছে। আর একই কারণে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্বান্ত নিতেও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ নগরীতে এখন পর্যন্ত ৫০০-এর মতো আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২২ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫১৫ জন। এদের মাঝে আবার ১৪০ জনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মূলত ঢাকা এবং গাজীপুরের কাছে হওয়ায় ময়মনসিংহ নগরীতে আক্রান্তের হার বেশি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিপুল সংখ্যাক চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। রোগীদের দেওয়া তথ্যমতেই নগরীর হাসপাতাল এলাকা বলে চিহ্নিত চরপাড়া, মাসকান্দা, আকুয়া এবং কাচিঝুলি এলাকাতে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে। এজন্য প্রশাসন এসব এলাকাকে রেড জোন ঘোষণাও করে। কিন্তু পরে দেখা যায় অনেক রোগী এসব এলাকার ঠিকানা উল্লেখ করলেও আসলে তারা অন্য এলাকার বাসিন্দা। এমনকি কেউ কেউ অন্য জেলারও বাসিন্দা। কাজেই যে এলাকাকে রোগী আক্রান্তের বিবেচনায় রেড জোন ভাবা হচ্ছে আসলে প্রকৃত চিত্রটি হয়তো তা নয়। তাই রেড জোন এবং লকডাউনের সিদ্বান্ত নিতে গিয়ে করোনা সংক্রান্ত কমিটি সিদ্বান্ত হীনতায় পড়ে যায়। যে কারণে এখন পর্যন্ত নগরীর কোনো এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হচ্ছে না। একই কারণে লকডাউনের বিষয়টিও এখনও শুরু হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত কয়েকদিন ধরে রোগীর প্রকৃত ঠিকানার বিষয়টি কঠোর ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এভাবে আগামী কিছু দিন রোগীর অবস্থান বুঝে রেড জোন ঘোষণা এবং প্রয়োজনে লকডাউনের সিদ্বান্তে আসতে পারেন প্রশাসন। এজন্য আপাতত যে সব রোগী শনাক্ত হচ্ছেন তাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে ঐ বাড়ি এবং এলাকাতে লাল নিশান টানানোর সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ সিদ্বান্ত সাময়িক। যে কোনো সময় অন্য কোনো সিদ্বান্ত কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করতে পারেন।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এইচ কে দেবনাথ বলেন, আপাতত লাল নিশান টানানোর সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্বান্ত আবার রদবদল হতে পারে।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে চলেছে ময়মনসিংহের প্রশাসন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব, আইন শৃংখলা বাহিনী এবং সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নানাবিধ সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে সর্বসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে ১৪০ হদিস না হওয়া করোনা রোগীর ঠিকানা উদ্ধারে যথেষ্ট তৎপর হওয়া উচিত বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।