ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে যে কারণে

ময়মনসিংহ অঞ্চলের সড়ক-মহাসড়কে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো ও চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ৯৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। আর পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনার পরিমাণ ৫ শতাংশ। সম্প্রতি ময়মনসিংহ লাইভ এক অনলাইন জরিপ এবং স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পায়। এছাড়াও স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের সড়ক দুর্ঘটনার বেশিরভাগই ঘটছে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে।

অনুসন্ধানে জানাযায়, মহাসড়কে আইনের প্রয়োগ একেবারেই নেই, আর এ সুযোগেই চালকরা বেপরোয়া হয়ে হালকা, মাঝারি ও ভারী যানবাহন চালান। যে কারণে মহাসড়কে বলি হচ্ছে দেশের মানুষ, যা দেশের অর্থনীতিকেও পেছনে ঠেলে দিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার পর যথাযথ আইনের ব্যবহার না হওয়ায় দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির পরিমাণ একেবারেই কম। অপরদিকে চালকের লাইসেন্স পাওয়ার পদ্ধতি খুবই দুর্বল এবং তাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ক্ষতিপূরণ দেওয়া বা পাওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ইনস্যুরেন্স করার নামে কতগুলো টাকা নিয়ে যাচ্ছে।

সড়কে অনুসন্ধানে দেখা যায়, হালকা, মাঝারি ও ভারী যানবাহন চলছে লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে। এ ছাড়া পেশাদার চালকদের মধ্যে বহু চালক লাইসেন্স পেয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের চাহিদা মেনে, যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই। সরকার মহাসড়কে রিকশা, অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ করলেও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ময়মনসিংহের মহাসড়কগুলোতে সব ধরনের ছোট যানবাহন চলতে দেখা যায়। আর এসব ছোট ছোট যানবাহন যেমন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ত্রি হুইলার, মাহিন্দ্রসহ যাত্রীবহণকারী ফিকআপ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই রাস্তায় বের হচ্ছে বলে দাবি চালকদের। চালকদের মতে, এসব ছোট ছোট যানবাহন থেকে প্রতিমাসে মাসোহারা আদায় করা হয়। যে কারণে এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচলে কেউ বাঁধা দেয়ার সাহস পাননা।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক ত্রি-হুইলার চালক জানান, ময়মনসিংহ শহরের পাটগুদাম ব্রীজে এমন অনেক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা আছে যেগুলোর কোন লাইসেন্স নাই। অথচ মান্থলি দেয়ার কারণে সড়কে দেদারছে এসব সিএনজি চলছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের চৌধুরী মুন্না ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, ময়মনসিংহের সড়কগুলোতে ত্রি-হুইলার, ব্যাটারি চালিত ছোট যানবাহনগুলোর জন্য দুর্ঘটনা বাড়ছে। আর এসব গাড়ি থেকে প্রতিমাসেই মাসোহারা নেয়া হয় যে কারণে তিনি পুলিশ প্রশাসনকেও দায়ি করেন। তিনি আরো বলেন, পুলিশ প্রশাসন যদি কঠোর হয় তবে এসব গাড়ি আর মহাসড়কে উঠতে পারবে না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) মো. আব্দুল খালেক বলেন, ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার চালকরাও এখন ভারী যানের চালক হয়ে যাচ্ছে, অথচ তারা কোন ধরণের ট্রেনিং নিচ্ছে না। তাদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। তবে পুলিশের তৎপরতা খুবই কম। সরকারের সব সংস্থা একযোগে কাজ করলে একটা শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

Share this post

scroll to top