ময়মনসিংহের সন্তোষপুর “সাদা সোনা” খ্যাত রাবারের জন্য বিখ্যাত

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার সন্তোষপুর। এই এলাকাটি আজ “সাদা সোনা” খ্যাত রাবারের জন্য যেমন বিখ্যাত তেমনি বিরল প্রজাতির বিলুপ্ত বানরের দেখা পেতে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পর্যটন স্পট হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।

ময়মনসিংহের নয়নাভিরাম এই বনটির রাবার বাগানের গাছের কষ দিয়েই তৈরি হচ্ছে রাবার। আর এখান থেকে উৎপাদিত রাবার দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। যেকারণে, সারাবিশ্বে রাবার দিয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার ধরনের দ্রব্যসামগ্রী তৈরির পেছনেও অবদান রাখছে ময়মনসিংহের এই রাবার বাগানটি।

তবে ময়মনসিংহে এই বিশাল রাবার বাগানটি থাকলেও, রাবার পণ্য উৎপাদনকারী তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠায় দেখা যাচ্ছে না আলোর মুখ। এদিকে এই রাবার শিল্পকে কেন্দ্র করেই ময়মনসিংহে গড়ে উঠতে পারে প্রশিক্ষিত রাবার শ্রমিক সরবরাহ কোম্পানি। আবার চালু হতে পারে রাবার থেকে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন কারখানা ও রাবার কাঠ প্রক্রিয়াজাত কারখানাসহ রাবার কাঠের আসবাব তৈরীর কারখানা।

অপরদিকে ময়মনসিংহের এই রাবার বাগান দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গাসহ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে সহজে স্থান কর নিতে পারে। কারণ শ্রমিক সংকটের কারণে ইতোমধ্যে এশিয়ার সর্বাধিক রাবার সরবরাহকারী দেশ মালয়েশিয়া পর্যায়ক্রমে রাবার চাষ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ, এই সুযোগকে সরকার কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে এশিয়ার অন্যতম রাবার সরবরাহকারী দেশ।

দেশেও রাবারের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই দেশের চাহিদা মিটাতে এবং রাবার আমদানী কমিয়ে বরং রাবার ও রাবার কাঠ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব ময়মনসিংহের এই বাগান থেকে।

ময়মনসিংহের সন্তোষপুরে আশির দশকে রাবার বাগান সৃজন হলেও আগে আরও অনেক ধরনের বন্যপ্রাণীর দেখা মিলতো। তবে মানুষের উৎপাতে এখন শুধু কিছু সংখ্যক বানর কোনো রকম টিকে আছে।

এই বনটিতে রয়েছে বিলুপ্ত প্রজাতীর প্রায় ৫০০ বানর। বনটিতে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে বানরদের। অনেক সময় দেখা যায় যেন বানরের সভা বসেছে। নানা বয়স আর সাইজের বানর একসাথে হুলুস্থুল করছে।

এদিকে বন বিভাগ থেকে বানরের জন্য পরিমাণের তুলনায় অনেক কম খাবার সরবরাহ হওয়ায় লোকালয়ে চলে যাচ্ছে অনেক বানর। আবার অনেক বানরের খাবারের শেষ আশ্রয়স্থল হলো বনে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা। বনের ভেতরে দোকানিদের কাছ থেকে কলা, বাদাম কিনে বানরদের দিলে বানরগুলো কোলে, কাঁধে একেবারে নির্ভয়ে এসে ওঠে। মনেই হয় না যে, এই বানরগুলো বন্য। বরং বানরের আচরণে বোঝা যায়, আমরা যেন ওদের কত চেনা-পরিচিত।

Share this post

scroll to top