ময়মনসিংহের ল্যাবে নেত্রকোনার করোনা শনাক্ত বন্ধ থাকায় জট লেগেছে নমুনার

Netrokona-corona-virusময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের পিসিআর মেশিনে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনার পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু পাঁচ জেলা থেকে প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। ফলে ল্যাবে নমুনার জট সৃষ্টি হয়েছে।

গত ২৩ এপ্রিল নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া গ্রামে গাজীপুর ফেরত এক নারীর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু সাতদিনেও তার পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি। রিপোর্ট না আসায় দরিদ্র পরিবারটি কোয়ারেন্টাইনে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

শুধু ওই নারীই নন, নেত্রকোনার ১০ উপজেলা থেকে সংগৃহীত শত শত নমুনা পড়ে আছে ল্যাবে। কিন্তু পরীক্ষার অভাবে সাতদিনেও রিপোর্ট মিলছে না। এ অবস্থায় নেত্রকোনার করোনা রোগী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। এর ফলে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আইসোলেশন প্রক্রিয়াও। সব মিলিয়ে বিরাজ করছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নেত্রকোনার ১০ উপজেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অণুজীববিদ্যা বিভাগের ল্যাবে। নেত্রকোনা ছাড়াও সেখানে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর এবং সুনামগঞ্জের আংশিক এলাকার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ওই ল্যাবের পিসিআর মেশিনে প্রতিদিন দুই বারে সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনার পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু পাঁচ জেলা থেকে প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয় এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এ কারণে ল্যাবটিতে নমুনার জট সৃষ্টি হয়েছে।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ১০ উপজেলা থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ১৪৪ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার রাত পর্যন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেছে মাত্র ৪৯১টির। বাকি ৬৫৩টি নমুনা এখনও ল্যাবে পড়ে আছে। অন্য জেলা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নেত্রকোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলেও ময়মনসিংহের ল্যাব কর্তৃপক্ষের অন্তত চারদিন সময় লাগবে।

এ অবস্থায় ২২ এপ্রিল থেকে নেত্রকোনার নমুনা পরীক্ষা প্রায় বন্ধ। পরবর্তী সাতদিনে জেলার একশটি নমুনার পরীক্ষাও করা হয়নি। অথচ প্রতিদিন জেলা থেকে শত শত নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিদিনই সম্ভাব্য রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহের ল্যাবে পাঠাচ্ছি। কিন্তু ল্যাব কর্তৃপক্ষ নিয়মিত নমুনা পরীক্ষা করতে পারছে না। এ কারণে রোগী শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নেত্রকোনায় এ পর্যন্ত ৩৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সাতদিন পর্যন্ত রিপোর্ট না আসায় ঠিক কতজন আক্রান্ত তা জানা যায়নি।

Share this post

scroll to top