ময়মনসিংহের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে সাভারে পিটিয়ে হত্যা

ঢাকার সাভারে ময়মনসিংহের মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম জাহাঙ্গীর মিয়া (৩২)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার বুড়িকান্দি গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। জাহাঙ্গীর পরিবারসহ সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি মহল্লায় বসবাস করতেন এবং বড় ভাই মানিকের সঙ্গে হোটেল ব্যবসা করতেন।

শুক্রবার দুপুরে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিহত ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এর আগে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের লোকজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাকে মৃত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘আদর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র।’ প্রতিষ্ঠানটি সাভারের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উত্তরা মার্কেটে একটি ঘর ভাড়ায় নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ফোন করে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। তখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে জানিয়ে এক মাস পর পরিবারকে দেখা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তার আধা ঘণ্টা পরই নিরাময় কেন্দ্রের লোকজন ফোন করে এনাম মেডিকেলে আসতে বলে। এসে জাহাঙ্গীরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এনাম মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জুয়েল নামে এক ব্যক্তি মৃত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

নিহতের ভাই মানিক জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় জাহাঙ্গীরকে বৃহস্পতিবার বিকেলে রেডিও কলোনির ‘আদর’ মাদক নিরাময় কেন্দে ভর্তি করি। রাতে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সেখান থেকে জানানো হয় সে (জাহাঙ্গীর) ভালো আছে। সকালে (শুক্রবার) তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করে তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। দুপুর ১২টার দিকে নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফোন করে দ্রুত এনাম মেডিকেলে যেতে বলা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে জাহাঙ্গীরের মরদেহ দেখতে পাই। তবে আদর মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে পাওয়া যায়নি।

জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর ভাই সাদেক বলেন, হাসপাতালে গিয়ে তার (জাহাঙ্গীর) মরদেহ দেখতে পাই। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে পিটিয়ে বা মারধর করে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান বলেন, একদিন আগেই জাহাঙ্গীরকে নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ওই ব্যক্তির (জাহাঙ্গীর) ঘাড়, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Share this post

scroll to top