মুক্তাগাছা থানায় আটক রেখে বৃদ্ধ মহিলার জমি দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

Muktagacha News Press Conferenceময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানায় আটক রেখে ৭০ বছর বয়সী এক মহিলার সাড়ে ৬ শতাংশ জমি দখল এবং মিথ্যা মামলায় দুই ছেলে ও পুত্রবধুসহ তাকে জেলহাজতবাসের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগি পরিবার।

মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তাগাছা উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মৃত নুরুল হকের স্ত্রী ৭০ বছর বয়সী খোদেজা খাতুন এ ঘটনার জন্য মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাসকে দায়ি করেন। তিনি বলেন, দখলকারিদের পক্ষ নিয়ে ওসি তাদেরকে থানায় আটক করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলহাজত পাঠান। তিনদিন হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি পান তারা। তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধপূর্ণ জমিতে কারখানা নির্মাণ করে তার ছেলে ছিদ্দিককে চাকরি দেয়ার ভুয়া প্রলোভন দেখিয়ে দানপত্র দলিল করে নেন প্রতিবেশী মানিক মিয়া। সেই জমি সাবকাবলা দলিল করে দিতে ও জমি দখল নিতে চাপ দেয়া হয় খোদেজা খাতুনকে। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও করেন খোদেজা খাতুন। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পুলিশ তাকেসহ দুই ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ও আব্দুর রাজ্জাক, পুত্রবধু সুলতানা বেগমকে টেনেহিচড়ে থানায় নিয়ে যায়। থানায় আটকে রেখে তাদের সাড়ে ৬ শতাংশ জমি প্রতিবেশী মানিক মিয়াকে দলিল করে দিতে চাপ দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরদিন পহেলা জনুয়ারী মানিক মিয়াকে মারধর ও চুরির অভিযোগ এনে ৬ জনের নামে দায়ের করা মামলায় তাদেরকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সেই সুযোগে মানিক মিয়া জমিটি জবরদখল করে চারদিকে বাউন্ডারি নির্মাণ করে।

খোদেজা খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, প্রতিপক্ষ মানিকের পক্ষে মুক্তাগাছা থানার এসআই হুমায়ুন বাড়িতে এসে জমি লিখে দিতে চাপ দেয়। তিনি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে অবহিত করলে এস আই হুমায়ুন নীরব হয়ে যান। এরপর ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস খোদেজার বাড়িতে গিয়ে জমি লিখে দিতে চাপ দেন। গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে খোদেজা ও তার পরিবারের লোকদের থানায় ডেকে এনে জমি লিখে দিতে আবারো চাপ দেয় ওসি। খোদেজা এবং তার পরিবারের অভিযোগ তারা এ বিষয়ে রাজী না হলে পরদিন একটি মিথ্যা মামলায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়। মামলার বাদী হন জমির জবরদখলকারি মানিক মিয়া। ওই মামলায় খোদেজা খাতুনকে ৫নং আসামী করা হয়। বৃদ্ধা খোদেজাকে দেখে আদালত জামিন দেন। তবে পরিবারের অন্য তিনজনকে জেল হাজতে পাঠানোর তিনদিন পর তারাও জামিন পান।

এ ব্যাপারে খোদেজা খাতুনের প্রতিপক্ষ মানিকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তার দায়ের করা মামলা সঠিক। এ ব্যাপারে মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, খোদেজা খাতুনের ছেলে জমি বিক্রি করেছে এবং টাকাও নিয়েছে। কিন্তু দখল বুঝিয়ে দেয়নি। এরপর মানিককেও মারধর করেছে। মানিকের মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ কোনো পক্ষপাত করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।##

Share this post

scroll to top