“মাছ রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অনুসরণ প্রয়োজন”

গত দশকে দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। বিশ্বে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। দেশের মানুষের মাথাপিছু মাছের চাহিদা মিটিয়ে মাছ উৎপাদন এখন উদ্বৃত্ত। কিন্তু আন্তর্জাতিক কিছু নিয়ম ও মানদণ্ড মেনে চাষ না করায় এই উদ্বৃত্ত মাছ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দেশে এ মানদন্ডে মাছ চাষ চালু করার জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়া প্রয়োজন।

শনিবার (১১ জুন) ময়মনসিংহের জেলা পরিষদের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে এক সেমিনার আয়োজিত হয়। ‘ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্যসম্পদ : বর্তমান অবস্থা ও টেকসই উন্নয়নে করণীয়‘ শীর্ষক ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ভাবে মাছ চাষে মানদন্ডগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পানির গুণাগুণ নিয়ন্ত্রণ করা, খাদ্যের গুনাগুন নিয়ন্ত্রণ করা, বিচক্ষণতার সাথে মাছের ঔষধ ব্যবহার করা ইত্যাদি। এ সমস্ত বিষয়গুলো একটি মানদন্ডের আওতায় চাষি পর্যাযয়ে বাস্তবায়ন করতে না পারলে আমরা বিদেশে মাছ রপ্তানি করতে পারবো না।

সেমিনারে ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আফতাব হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক। অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

সেমিনারে মূখ্য আলোচক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের মাঝে মৎস্য চাষে গবেষণালব্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজন বেশি বেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে মৎস্য চাষি ও খামারিদের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ বৃদ্ধির জন্যও মৎস্য অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি হাওড়ে একটি মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে পারলে আমাদের মৎস্য উৎপাদন অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে মাছ চাষ করার জন্য মৎস্য চাষি ও খামারিদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন সেক্টরে আরও ৩-৪ হাজার জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা সরকার করবে। সরকারি খামারগুলো আধুনিকীকরণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তর।

Share this post

scroll to top