ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে ‘মানুষের আবেগ নিয়ে নোংরা রাজনীতির’ অভিযোগ তুলে ‘ছাত্র অধিকার পরিষদ’ ভেঙে আলাদা কমিটি করেছে একটি অংশ।
সংগঠনটির ‘বহিষ্কৃত’ যুগ্ম আহ্বায়ক এ পি এম সুহেলের নেতৃত্বে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে ২২ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলন করে নুরুলবিরোধীরা নতুন কমিটি ঘোষণা করেন৷ তাঁরা নুরুলের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও তুলেছেন। নুরুল ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।
নতুন গঠিত সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কমিটিতে এ পি এম সুহেলকে আহ্বায়ক ও ইসমাঈল সম্রাটকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। যুগ্ম সচিব পদে আছেন সৈয়দ সামিউল ইসলাম।
নতুন কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন ১৪ জন। তাঁরা হলেন আমিনুর রহমান, জালাল আহমেদ, আবদুর রহিম, আমিনুল হক, রিয়াদ হোসেন, মো. সেলিম, শাকিল আদনান, নাদিম খান, এ কে এম রাজন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, সাজ্জাদুর রহমান, আফরান নাহিদ ও জাহেদুল ইসলাম।
কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে মিজানুর রহমান, মো. সিয়াম ও মো. জুনায়েদকে। এ ছাড়া উপদেষ্টা হিসেবে আছেন মোহাম্মদ উল্লাহ মধু ও মুজাম্মেল মিয়াজি।
নতুন সংগঠনের কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের দাবি, তাঁরা সবাই নুরুলের সংগঠনের (ছাত্র অধিকার পরিষদ) বিভিন্ন ইউনিটে ছিলেন। তবে নুরুল বলছেন, সুহেল ছাড়া আর কেউ তাঁর সংগঠনে ছিলেন না। নতুন সংগঠনের কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের দাবি, তাঁরা সবাই নুরুলের সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইসমাঈল সম্রাট বলেন, মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, অগণতান্ত্রিকভাবে সংগঠন পরিচালনা, ত্যাগী ও দুঃসময়ের সহযোদ্ধাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অবমূল্যায়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ধর্ষণের মামলাকে নোংরা রাজনৈতিকীকরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদ ও সাংগঠনিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে তাঁরা নতুন কমিটি ঘোষণা করছেন।
ইসমাঈল সম্রাট বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ করা হয়। নাম পরিবর্তনের সঙ্গে নীতি এবং আদর্শও বদলে যায়। এই সংগঠনে এখন স্বেচ্ছাচারিতা চলে। জোর করে ব্যক্তির ইমেজ চাপিয়ে দেওয়া হয়। তাদের চরিত্র বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর মতোই। কোনো বিষয়ে সমালোচনা করলে বিভিন্ন নামে ট্যাগ দেওয়া হয়। গণতান্ত্রিক মতানৈক্যের কারণে আমরা সংগঠনকে আগের নামে ফিরিয়ে নিচ্ছি৷’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নিজের সংগঠনের এই ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, ‘এ পি এম সুহেল ছাড়া নতুন সংগঠনের কমিটিতে থাকা বাকিরা কেউই আমার সংগঠনে ছিলেন না৷ আর সুহেলকে আগেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’
নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের ধারণা, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্ররোচণায় আমাদের চাপে ফেলতে এই কাজ করানো হয়েছে। আমাদের অপরাধ হলো সরকারের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলা। তবে নতুন সংগঠন করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। জনগণ বিবেচনা করবে কোনটি আসল আর কোনটি নকল সংগঠন।’