ভারত তিস্তার বাঁধ ছেড়ে দিয়েছে: বাংলাদেশে হাজারো পরিবার পানিবন্দি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গজলডোব পয়েন্টের সবকটি বাধ খুলে দিয়েছে ভারত। এতে প্রবল বেগে বাংলাদেশে ঢুকছে বানের পানি এমন খবর দিয়েছে দৈনিক মানব জমিন।

নীলফামারীতে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানি। অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে বুধবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩.৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ১৫টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার পরিবারের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। রংপুর-বড়খাতা সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় রেড অ্যালার্ট (লাল সংকেত) জারি করে তিস্তার আশপাশের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বাড়তে শুরু করলে রাত ২টায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে। রাত ৪টায় আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বর্তমানে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩.৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার নদীবেষ্টিত পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছচাপনী, পশ্চিম ছাতনাই, গয়াবাড়ীর একাংশে, তিস্তার ভাটিতে জলঢাকার ৩টি ইউনিয়নসহ ১৫টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ছাতুনামা ভেন্ডাবাড়ী ও ফরেস্টের চরের পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমড় পানিতে তলিয়ে গেছে এসব পরিবারের বসতভিটা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, দক্ষিণড়িবাড়ী (মজসিদপাড়া) ও উত্তর খড়িবাড়ী চরের চার শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অনেকের বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামের নদীরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেখানকার অনেক মৎস্য খামার বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মৎস্য খামারীরা এখন নিঃস্ব।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি অমিতাব চক্রবর্তী বলেন, অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সবকটি গেট খুলে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সাভির্সের নীলফামারী, ডোমার, ডিমলা ও চিলাহাটি টিম উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছে।

Share this post

scroll to top