ব্রিটিশ লেবার পার্টিতে ভাঙ্গন, ৭ এমপির পদত্যাগ

স্থানীয় সময় সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে পদতদ্যাগের ঘোষণা দিয়ে তারা বলেন, এখন থেকে স্বতন্ত্র এমপিদের নতুন একটি দল হিসেবে তারা পার্লামেন্টে বসবেন।

বিবিসি লিখেছে, ব্রেক্সিট প্রশ্নে করবিনের সাথে একমত নন পদত্যাগী সাত লেবার এমপি। পাশাপাশি দলের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ এনেছেন তারা। পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লুইসিয়ানা বার্জার বলেন, লেবার পার্টি সাংগঠনিকভাবে ‘ইহুদী বিদ্বেষী’ দলে পরিণত হয়েছে এবং এ দলে থাকতে তিনি ‘লজ্জা পাচ্ছেন’।

আর করবিনের দিকে ইংগিত করে ক্রিস লেসলি বলেছেন, ‘অতি বামরা লেবার পার্টিকে ছিনতাই করে ফেলেছে’।

তাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে লেবার নেতা করবিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘দলের যে নীতি ২০১৭ সালের নির্বাচনে লাখো মানুষের মধ্যে প্রেরণা জাগালো, সেই নীতির জন্য কাজ করে যেতে তারা ব্যর্থ হলেন’।

সাত এমপির পদত্যাগের ঘটনায় ৩৮ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভাঙনের কবলে পড়ল ব্রিটিশ লেবার পার্টি।

এর আগে ১৯৮১ সালে চারজন লেবার এমপি দলত্যাগ করে ‘চার কুচক্রী’ আখ্যা পেয়েছিলেন। সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নামে একটি দল গঠন করেছিলেন তারা, তবে সে দল বেশি দিন টেকেনি।

২০১৫ সালের নির্বাচনে হারের পর টালমাটাল লেবার পার্টির হাল ধরে দলকে অনেকটাই গুছিয়ে আনতে সক্ষম হন বর্ষিয়ান করবিন। ২০১৭ সালের আগাম নির্বাচনে লেবার পার্টি জয়ী হতে না পারলেও পার্লামেন্টে দলের অবস্থানের খানিকটা উন্নতি হয়।

তবে করবিনের লেবার পার্টিতে কট্টর বামরা শক্তিশালী হতে থাকায় ডানঘেঁষারা চাপের মুখে আছেন। এ নিয়ে দলে টানাপড়েন চলছে দুই বছর ধরে।

ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লেবার পার্টি কঠোর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও করবিনের সমালোচনা রয়েছে দলের উদারপন্থিদের মধ্যে।

দলত্যাগী এমপি লুইসিয়ানা বার্জার বলেন, পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত খুবই ‘কঠিন আর বেদনাদায়ক’ হলেও এই মুহূর্তে তা জরুরি হয়ে পড়েছিল।

“আমরা দেশের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব করি, আমাদের সবার অতীতও এক রকম নয়। ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মে আমাদের জন্ম হয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই একই মূল্যবোধ ধারণ করি।

‘আজ থেকে আমরা স্বতন্ত্র এমপিদের একটি নতুন গ্রুপ হিসেবে পার্লামেন্টে বসব।’

সাত এমপি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৈঠক করে দায়-দায়িত্ব ঠিক করে নেবে বলে জানিয়েছেন ক্রিস লেসলি।

যারা লেবার পার্টি ছেড়েছেন, তাদের মধ্যে চুকা উমুনাকে ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় দাবিদার বিবেচনা করা হত। তিনি বলছেন, নতুন একটি রাজনৈতিক আন্দোলন শুরুর আগে পদত্যাগ হল তাদের প্রথম পদক্ষেপ।

স্বতন্ত্র এমপিদের নতুন যে গ্রুপটি তারা গঠন করেছেন, তাতে অন্যদেরও আমন্ত্রণ জানিয়ে চুকা উমুনা বলেছেন, পুরনো রাজনীতি ত্যাগ করে নতুন ধারা তৈরির এখনই সময়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top