ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার উপরে, উত্তরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

গত এক সপ্তাহের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার (১৮ জুলাই) মধ্য রাত থেকে শেরপুরের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। এরই মধ্যে জেলায় ৫০টি গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী রয়েছে প্রায় ৫০হাজার মানুষ। পানির তোড়ে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক ডুবে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের সাথে সবধরণের যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বন্যায় তলিয়ে গেছে কৃষকের রোপা আমনের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত।

জানা গেছে, বন্যার পানির তোড়ে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান ডাইভারশনের বেইলি ব্রিজের দক্ষিণ পাশের মাটি ধসে যাওয়ায় তিনদিন ধরে ওই সড়কে জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলের সাথে সবধরণের যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বিকল্প রাস্তা হিসেবে বলায়েরচরের ভিতর দিয়ে ছোট যানবাহন চালাচল করলেও বন্ধ রয়েছে বড় যানবাহন। রোববার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ব্রহ্মপুত্রের পানিবৃদ্ধির ফলে শেরপুর সদরের ৭ ইউনিয়ন, পৌরসভা একাংশ ও নকলা উপজেলার ২ ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫০টি গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী রয়েছে প্রায় ৫০হাজার মানুষ। তাদেরকে এখন নৌকা কিংবা কলার ভেলায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারিপাড়াসহ বন্যা কবলিত কিছু মানুষ গবাদিপশু নিয়ে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট রয়েছে। এছাড়াও এখন পর্যন্ত পৌঁছায়নি সরকারি ত্রাণ।

কামারেরচর ইউনিয়নের ৬নং চরের বাসিন্দা আফজল মিয়া, রবিউল মিয়া, লাল মিয়াসহ অনেকে বলেন, ‘আমরা খুব বিপদে আছি ভাই। আমাদের এলাকায় এখনো সরকারি কোন খাবার আসে নাই। আমাদের ঘরে পানি উঠে গেছে আমরা বের হতে পারছি না। ঘরে শুকনো খাবার খেয়ে আছি। রান্না করতে পারছি না।’

জেলা খামারপারি উপ-পরিচালক মোহিত কুমার দে বলেন, ‘এবারের বন্যায় জেলায় ৩৩৮ হেক্টর জমির বীজতলা ও ৪৬ হেক্টর জমির সবজির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। যদি ৩/৪দিনের মধ্যে পানি নেমে না যায় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি হবে কৃষকদের। আর যদি পানি নেমে যায় তাহলে কোন বড় ধরণের ক্ষতি হবে না জানান তিনি।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওয়ালীউল হাসান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শেরপুর জেলায় বন্যায় কবলিতদের জন্য নগদ আড়াই লাখ টাকা ও ১৫০ মে.টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে যা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।’

সরকারদলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে চরপক্ষীমারী ইউনিয়নে সরকারি ত্রাণ দেওয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে এসব ত্রাণ বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা  হয়।

Share this post

scroll to top