বিস্ফোরণের পর থেকে মসজিদে নেই আজান, হয় না নামাজ

মুয়াজ্জিনের সুমধুর কন্ঠে ‘আল্লাহু আকবার ‘ ধ্বনিতে যে মসজিদ থেকে দেয়া ফজরের আজানের শব্দে ঘুম ভাঙ্গতো তল্লাবাসীর গত তিন দিন ধরে আজান দেয়া আর নামাজ পড়া কোনটাই হচ্ছে সেই মসজিদে।
শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণের পর বায়তুস সালাত জামে মসজিদে সকাল থেকে রাত অবধি উৎসুক মানুষের সমাগম ঠিকই ঘটে কিন্তু মুসল্লির সমাগম নেই। বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনে মসজিদটি আলামত হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে আসছে বিভিন্ন সংস্থার লোকজন।

জানা যায়, ফতুল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম তল্লার বায়তুস সালাত জামে মসজিদ। প্রতি দিন ৫ বার আজানের সুমধুর ধ্বনি শুনে নামাজে আসতেন এলাকার মুসল্লিরা। কিন্তু চোখের পলকে পালটে গেলো দৃশ্যপট। একটি ঘটনা বদলে দিলো এলাকাবাসীর জীবন।

গত তিন দিন ধরে মসজিদে ওয়াক্ত ফুরিয়ে যায়, আজান শোনা যায় না। এলাকাবাসী মসজিদের দিকে তাকাতেও ভয় পান, সবার বুকে স্বজন হারানোর আর্তনাদ।

শুক্রবার রাতে মসজিদে এশার নামাজ চলাকালীন এক দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন অন্তত ২৪ জন, হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছেন আরো ১৩ মুসল্লি। তদন্তের স্বার্থে মসজিদের সব কার্যক্রম বন্ধ।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর গফুর জানান, গত তিন দিন হলো আমাদের মসজিদে নামাজ তো দূরে থাক, আজানও দেয়া হচ্ছে না। তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছে, সব বন্ধ। এলাকার মুসল্লিরাও যাচ্ছেন অন্য মসজিদে। তদন্ত না হলেই বা কী, মসজিদের যে অবস্থা হয়েছে নামাজ পড়ার অযোগ্য।

মসজিদের সেই দুর্ঘটনার ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানই তদন্ত কমিটি গঠন করে ফেলেছে। এই তদন্তের আলামত রক্ষার স্বার্থে মসজিদের সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না।

গফুর মিয়া আবেগঘন কন্ঠে বলেন, যত দিন তদন্ত চলছে, তত দিন তো আর সংস্কার করতে পারব না। এই কয় দিন এলাকাবাসী না হয় অন্য কোথায় পড়ুক নামাজ।

তিনি দোয়া চেয়ে বলেন, আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই মহাবিপদ থেকে রক্ষা করুন। আমাদের মসজিদে যেন আবার আজান হয়, আল্লাহু’ আকবর ধ্বনির প্রতিধ্বনি হয় মসজিদের দেয়ালে।

Share this post

scroll to top