বাংলাদেশে পঙ্গপাল আসার নজির নেই : কৃষিমন্ত্রী

উৎপাদন খরচ কমাতে দেশের কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘বোরো ধানসহ সব ধানের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। সে জন্য কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে।’

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেটের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ধান রোপন, কাটা, মাড়াই এবং শুকানোসহ সব কাজে যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, এ লক্ষ্যে চলতি বছর ভর্তুকি মূল্যে ২০০ কোটি টাকার কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার ও রাইস ট্রান্সপ্লানটারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে বিতরণ চলছে।

তিনি আরো জানান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী বছরে আরও বেশি করে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার ও রাইস ট্রান্সপ্লানটারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে বিতরণ করা যাবে। এর মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলেও মনে করেন কৃষিমন্ত্রী।

পঙ্গপালের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পঙ্গপাল আসার নজির নেই। এটি সাধারণত পাকিস্তান ও ভারতের রাজস্থান পর্যন্ত আসে। এ দেশে আসার সম্ভাবনা কম। তবু বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কক্সবাজারে বিজ্ঞানীদের পাঠানো হয়েছে।’

‘কক্সবাজারে পঙ্গপাল এসেছে- এ ধারণা ঠিক নয়। তবে কী পোকা এসেছে এবং তা কতটুকু ক্ষতিকর সেটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। এবং তাদের মতামত নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।

করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বার বার কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান, পৌর মেয়র মাসুদ পারভেজ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফি উদ্দিন মনিসহ উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে কৃষিমন্ত্রী মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩০০ দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণ বিতরণ করেন। এছাড়া, টেংরি গোরস্থান ঈদগাহ মাঠে সাবেক ছাত্রনেতা রাইসুল ইসলাম জুয়েলের উদ্যোগে আরও ৩০০ দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি। করোনা থেকে নিরাপদে থাকতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ ত্রাণ বিতরণ করা হয়। সূত্র : ইউএনবি

Share this post

scroll to top