বন্ধুদের নিয়ে বাবাকে হত্যা করে পাষন্ড ছেলে: র‌্যাবের হাতে আটক ৩

বাবা আমাকে পুলিশে ধরেছে, একথা শুনার পরই ছেলে তরিকুল ইসলাম বিপ্লবকে দেখতে রাতের আঁধারে ছুটে যান বাবা আব্দুল আজিজ। আর এই সরলতার সুযোগ নিয়ে ক্ষোভে মাদকের জন্য শাসন করায় নিজ পিতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে পাষন্ড ছেলে। এমনই এক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাব ১৪ এর আভিযানিক দল। শুধু তাই নয়, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতেও সচেষ্ট হয়েছে র‌্যাব।

বুধবার সকালে র‌্যাব ১৪ এর কোম্পানী অধিনায়কের কার্যালয় সিপিএসসি, টিটিসি ময়মনসিংহে এক সংবাদ সম্মেলনে নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার চাঞ্চল্যকর আব্দুল আজিজ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১৪’র কোম্পানী অধিনায়ক মেজর আখের মুহাম্মদ জয় সাংবাদিকদের জানান, গত ১লা সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার কুতুবপুর গ্রামে ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ নামের এক ব্যক্তিকে কে বা কাহারা কুপিয়ে হত্যা করেছে এই মর্মে সংবাদ পাওয়া যায়। পরে র‌্যাব-১৪ এর একটি চৌকস দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ছায়া তদন্ত, ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে জোর তৎপরতা শুরু করে ঘটনার সাথে জড়িত বিজয় কর্মকার, তরিকুল ইসলাম রানা, আজাহার মিয়াকে বুধবার রাতে ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানা থেকে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায় , নিহত ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের ছেলে তরিকুল ইসলাম বিপ্লব মাদকাসক্ত হয়ে প্রায় সময় বাড়ীতে এসে মাতলামি করতো। মাদক সেবন থেকে ছেলেকে বিরত রাখতে বাবা আব্দুল আজিজ বিপ্লবকে প্রায় সময় শাসন করতে গিয়ে ধমকসহ মারপিট করতো। এতে বিপ্লব নিজেকে সংশোধন না করে বাবা আব্দুল আজিজের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার মতো জঘন্য পরিকল্পনা করে। ঘটনার দুইদিন আগে সন্ধ্যার সময় শ্যামগঞ্জ বাজারে বসে বন্ধু বিজয়, রানা, আজাহার, রাসেল ও সাধনকে বিশ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করে বাবাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে বিপ্লব। হত্যার মিশন সফল করার জন্য বিপ্লব তার সহযোগী বিজয়কে দুইটি চাইনিজ কুড়াল কেনার জন্য টাকা দিলে শ্যামগঞ্জ বাজারের সুমির বনিকের দোকান হতে দুইটি চাইনিজ কুড়ালও কেনে। পরে পুলিশে ধরেছে এমন কথা বলে বাবাকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে পরিকল্পনা মতো হত্যা করে। হত্যার সময় বিপ্লব এবং আজাহার আব্দুল আজীজের পেছন থেকে হাত ধরে এবং রাসেল ও সাধন গামছা দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে দুইদিক থেকে টেনে ধরে। পরে বিজয় এবং রানা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আব্দুল আজিজের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই নারকীয় ঘটনা ধামাচাপা দিতে পাষন্ড ছেলে বিপ্লব নিজেই তার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে বাবা আজিজের মৃত্যু হয়।

Share this post

scroll to top