ফ্রিডম পার্টি-জঙ্গি নেতাও এখন আওয়ামী লীগে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিদের রাজনৈতিক সংগঠন ফ্রিডম পার্টির নেতাও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এমন কি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির আত্মীয়স্বজনের ঠিকানাও হয়েছে আওয়ামী লীগে। জঙ্গি থেকে শুরু করে দাগি আসামিও বাদ পড়েনি। তারাও মামলা থেকে রেহাই পেতে কিংবা পুলিশের ধড়পাকড় থেকে বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে।

আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ঢাকার ২০টি আসনের নেতাকর্মীদের তালিকায় অবাক করা এমন সব চিত্র পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া আট বিভাগের নেতাকর্মীদের আলাদাভাবে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই আটটি তালিকা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং আট সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে দেওয়া হয়েছে।

তালিকার তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় রয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ফেনীর ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সহসভাপতি নোয়াখালীর এনামুল হক আরমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একেএম মমিনুল হক সাঈদ। যুবদলের রাজনীতি করতেন সম্রাট। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি।

এক সময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত একেএম মমিনুল হক সাঈদ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তারা তিনজনই ঢাকা-৮ (মতিঝিল ও রমনা) আসনের বাসিন্দা। ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুমিল্লার খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াও যুবদলের রাজনীতি করতেন। তিনি ঢাকা-১১ (গুলশান ও সবুজবাগ) আসনের বাসিন্দা। এই চার নেতাকেই যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সমকালকে জানান, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৈরি করা ওই তালিকায় আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীদের নাম এবং তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। তালিকাটি জেলা নেতাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। তারা ওই তালিকায় থাকা বিতর্কিতদের দল থেকে বাদ দেবেন।

এ তালিকায় আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরা আগে কোন দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দলে তাদের পদ-পদবি, তাদের দাদা, নানা, বাবা, চাচা, ফুফু, মামাসহ পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক তথ্য রয়েছে। আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীদের দাদা, নানা, বাবা, চাচা, ফুফু, মামাসহ পরিবারের সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকার তথ্যও রয়েছে ওই তালিকায়। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর সংশ্নিষ্ট নেতাকর্মীর পদ-পদবি ও দলীয় কার্যক্রমে তার সম্পৃক্ততার তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে। মামলা সংক্রান্ত তথ্যাবলিও রয়েছে ওই তালিকায়।

ফ্রিডম পার্টি ও রাজাকারকাণ্ড: গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী তেজগাঁও থানা ফ্রিডম পার্টির সমন্বয়ক সরদার মোস্তাক আহম্মেদ কালু আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তাকে তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগে আসা ঢাকা-৩ আসনের আওতাধীন কেরানীগঞ্জ মডেল এলাকার মোশারফ হোসেন ফারুকের বাবা মহসিন মিয়া ও চাচা আবু ইউসুফ লাতু মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন।

তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মাসুদুর রহমানের বাবা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন। এই থানার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এএসএম বাদলের স্ত্রী জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। উত্তরা-পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একিউ রাহাতের বিরুদ্ধে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনের সময়ে বোমা এবং ককটেল সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। তারা বিএনপির রাজনীতি করতেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর (অব.) কামরুল ইসলামের পিএস সাতারকূলের জয়নাল আবেদীনও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তিনি ঢাকা-১১ (গুলশান, সবুজবাগ) আসনের বাসিন্দা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা কর্মী লোকমান হোসেন ভূঁইয়া আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হয়েছেন। ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক।

জামায়াত থেকে এসেই নেতা: ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ মডেল, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ), ঢাকা-৪ (কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর), ঢাকা-৮ (মতিঝিল, রমনা), ঢাকা-১২ (তেজগাঁও, রমনা), ঢাকা-১৪ (মিরপুর, শাহআলী, সাভার) এবং ঢাকা-১৮ (উত্তরা, ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান) আসনে জামায়াতে ইসলামী থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ঢাকা-৪ আসনের শ্যামপুর থানার করিমুল্লাবাগের মোহাম্মদ মাসুদ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এখন শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তুরাগের মোহাম্মদ মোস্তাকিম এখন হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

আছেন জঙ্গি নেতাও: ঢাকা-১৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নেতা ঝিনাইদহের শৈলকূপার হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদ জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জড়িত ছিলেন বলে জানানো হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। তার বিরুদ্ধে জমি-সংক্রান্ত মামলাও রয়েছে। ঢাকা-১৮ আসনের আওতাধীন উত্তরা-পশ্চিম এলাকার জামায়াত কর্মী অ্যাডভোকেট শিউলী সুলতানা উত্তরা-পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। বনানীর কড়াইল জামাইবাজার এলাকার জসীম উদ্দিন নুরুকে বনানী থানা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। ঢাকা-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী কেরানীগঞ্জ মডেল এলাকার মোহাম্মদ সোলায়মান ও ঢাকা-১৮ আসনের উত্তরার মোহাম্মদ বাবুও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

মামলা থেকে রেহাই পেতে যোগদান: যোগদানকারীদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তারা মূলত মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বলে দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, কামরাঙ্গীরচরের মোহাম্মদ দেলোয়ার, হাবিল মাহমুদ, আবদুর রহমান ফালান ও মোহাম্মদ জাবেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলায় জড়িয়ে আছেন কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের নুরুল হক, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের অপু খান, পূর্ব নাখালপাড়ার আবদুল মোতালেব ভূঁইয়া, এমদাদুল ইসলাম ভূঁইয়া, আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচরের মোহাম্মদ শাহীন, সরকার মার্কেটের কবির হোসেন সরকার ও তুরাগের তাজুল মোল্লা। মামলা থাকার পরও উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন কবির এইচ সাগর।

আওয়ামী লীগে এসেই পদ-পদবি: বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া অনেকেই পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা বনেছেন। সামিমুল হক রনক নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি হয়েছেন। মোহাম্মদ এলিট হয়েছেন কলাকোপা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সম্পাদক। দোহারের বাশার মুন্সি ঢাকা জেলা প্রজন্ম লীগের সভাপতি হয়েছেন। তোফাজ্জল চেয়ারম্যান হয়েছেন দোহার থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। কুসুমহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন দোহারের আবু সাইদ মিয়া।

কামরাঙ্গীরচরের পারভেজ হোসেন বিপ্লব থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, আবদুর রশিদ সরকার ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, জসীম মুন্সি ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জাবেদুল ইসলাম পূর্ব রসুলপুরের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিরাজ তালুকদার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। শাহজাহান বাদশাকে শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি করা হয়েছে।

কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শ্যামপুরের শেখ রিফাত। তার ভাই শেখ রিয়াদ এই থানার আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। শ্যামপুরের ৩ নম্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (প্রস্তাবিত) হয়েছেন কদমতলীর নজরুল ইসলাম মোল্লা। মীর হাজারীবাগের আলীম আল ফাসানী শ্যামপুরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরিদাবাদের কোহেল মাহমুদ শ্যামপুর থানা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।

আরসিন গেটের শাহনাজ বেগমকে শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, জুরাইন টাওয়ারের হাবিবুল্লাহ হাবীব ও গিয়াস উদ্দিন সরদারকে শ্যামপুর থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি এবং যাত্রাবাড়ীর মীর হাজারীবাগের মোহাম্মদ নাদিমকে শ্যামপুরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এক সময়ে ছাত্রদলের রাজনীতি করে আসা বংশালের নাইম আহম্মেদ।

রাজারবাগ দাসপাড়ার চিত্ত রঞ্জন দাস যোগ দেওয়ার পর সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। একই এলাকার ঝন্টু দাশকে সবুজবাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক করা হয়েছে। সবুজবাগের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন মধ্য বাসাবোর মাসুদ হাসান শামীম। কাচারীপাড়া দক্ষিণগাঁওয়ের মোহাম্মদ আজাদ সবুজবাগের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি এবং নাহিদ রানা সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন।

যোগ দেওয়ার পরই নেতা হয়েছেন বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক উত্তর বাড্ডার কামরুল ইসলাম মিন্টু, ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আদর্শ নগরের সিরাজুল ইসলাম খান, ২১ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কুমিল্লা পাড়ার আরিফ হোসেন রশু, ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আসাদ, ২১ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ ও সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মুক্তার।

২১ নম্বর ওয়ার্ডের গুদারাঘাট ইউনিট আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ লিটন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ নগর ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন মোল্লা, ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ দিপু, সহ-প্রচার সম্পাদক লাইসুজ্জামান সপন এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম রনিও বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসে নেতা হয়েছেন।

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসেছেন তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এএসএম শামীম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পশ্চিম নাখালপাড়ার অ্যাডভোকেট তাসলিমা আক্তার দিপা, যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক তেজকুনীপাড়ার মোশারফ হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক তেজকুনীপাড়ার নারগিস আক্তার, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কার্যকরী সদস্য নাখালপাড়ার সাদিকুর রহমান হিরু ও এনামুল হক হাক্কানী।

২৪ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের আমির হোসেন, নিউমার্কেট থানার আওতাধীন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হয়েছেন সেন্ট্রাল রোডের শহিদুল কবির শহিদ, বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান, পল্লবী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক মহিন মোরশেদ পলাশ, আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপালের মোস্তফা মিয়া, বনানী থানা তাঁতী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বউ বাজারের মমিন সরকার নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।

বনানী থানা কৃষক লীগের সভাপতি মহাখালীর ওমর ফারুক কেরু, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফ আলী সরদার, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বনানীর আবুল কাশেম, বনানীর মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক কড়াইলের রুহুল আমিন বাবুল, তুরাগ থানা মোটর ও শ্রমিক লীগের সহসভাপতি মনির হাজী, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গুদারাঘাটের হারুন প্রধান, উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম এবং আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ভাদাইল পূর্বপাড়ার ফারুক হোসেনকেও নেতা বানানো হয়েছে।

জনপ্রতিনিধির তালিকায় ওরা: বংশালের আগা সাদেক রোডের ছাত্রদল নেতা আউয়াল হোসেন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সাইফুল ইসলাম আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এখন বনগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিএনপি থেকে এসে সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও টেউটির মিনহাজ উদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

সাফিল উদ্দিন আহম্মেদ নবাবগঞ্জের বাহা ইউনিয়ন এবং সাভারের আনোয়ার হোসেন আমিন বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মতো বিএনপির আরেক নেতা আনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগে আসার পর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েছেন বিএনপি নেতা আবু তাহের। তিনি বর্তমানে দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (প্রস্তাবিত)।

আশুলিয়ার মোন্তাজ উদ্দিন মোল্লা ধামসোনা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হলেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএনপির এই নেতা এখন ঢাকা উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার মতো দুর্গাপুরের জাকির মণ্ডল বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে আশুলিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হলেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

দীর্ঘ মিছিল: ঢাকার ২০টি আসনে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার মিছিল বেশ দীর্ঘ। তাদের মধ্যে রয়েছেন নবাবগঞ্জের মোহাম্মদ সবুজ, ফয়েজ আল মামুন, সুবেদুজ্জামান সুবেদ, দোহারের আয়নাল মাতুব্বর, আনোয়ার মাতুব্বর, ডাক্তার সোবহান, বাদশা মোল্লা, একলাল উদ্দিন, কাজী রুবেল, কেরানীগঞ্জের সাহাবুদ্দিন মেম্বার, নাজিম উদ্দিন, কেরানীগঞ্জ মডেলের মোহাম্মদ সেলিম, আলমগীর মেম্বার, লিয়াকত চেয়ারম্যান, হারুন মেম্বার, রুহুল আমিন, নানু হাজি, শাহ আলম, মোহাম্মদ বাবুল, জাকি উদ্দিন রিন্টু, নুরুল ইসলাম বাচ্চু, ইমাম হোসেন, কামরাঙ্গীরচরের সাহাবুদ্দিন সাবু, তানভীর আহম্মেদ রাজু, মোহাম্মদ সজীব, মোহাম্মদ মোর্তুজাক, মোহাম্মদ কালু, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের ওয়াহিদুজ্জামান ওয়াহিদ, সোহরাব হোসেন, রফিক মেম্বার, মোজাম্মেল হক মিন্টু, মোহাম্মদ জাকির, মোহাম্মদ বাবুল, আজিম ভাণ্ডারী, লালবাগের নবাবগঞ্জ লেন ক্লাব বাড়ির হাজী আলমগীর (সুরমা আলমগীর), আজিমপুর রোডের আনোয়ার হোসেন আমু, আবদুল আজিজ লেনের মোহাম্মদ হাসমত, কলাবাগানের মোজাম্মেল হোসেন বাবু, মোহাম্মদ লাবলু, আলমগীর হোসেন, বাড্ডার বেরাইদ পূর্বপাড়ার আলমগীর কবির জজ, বড় বেরাইদের কাউছার মাহমুদ, আরদ্দাপাড়ার আবুল বাসার, নবী হোসেন, মোড়াল পাড়ার নুরুল হক, আসকর টেকের মতিউর রহমান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ হাসান, কুয়েতি মসজিদ রোডের ইউছুফ আলী রনি, গুদারাঘাট লিংক রোডের আবদুল খালেক, দক্ষিণ বেগুনবাড়ীর মনির তালুকদার, শাহ আলী থানার তাজুল ইসলাম তাজু, পল্লবীর জাকির হোসেন, তারিকুল ইসলাম সন্টু, সাজেদুল ইসলাম লাড্ড, ইকবাল হোসেন, রূপনগরের আবদুল হাই মোল্লা, উত্তরখানের মোহাম্মদ শামীম, মোক্তার হোসেন, ভাটুলিয়া উত্তরপাড়ার শাহেন শাহ, লালবাগ মাণ্ডাপাড়ার মোহাম্মদ মহসীন, হাফিজুর ইসলাম, পশ্চিমপাড়ার মোহাম্মদ আরিফ, রুবেল হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, মুণ্ডারঘাট পাড়ার মনির হোসেন, মোহাম্মদ শফিক, মোহাম্মদ হান্নান, মনির হোসেন, মুণ্ডাপাড়ার নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণখানের মোহাম্মদ মামুন, মোহাম্মদ আবির ও মধুবাগের নুর হোসেন।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে যোগ দিয়েছেন মকবুল হোসেন। তিনি এখন তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য। জাকের পার্টির শেখ মোখলেছুর রহমানকে শ্যামপুরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। তিনি ঢাকা-৪ আসনে জাকের পার্টির এমপি প্রার্থী ছিলেন। গণফোরামের গোলাম রাব্বানী বাবলু ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সূত্র : সমকাল

Share this post

scroll to top