ফেনীতে নেই ফাঁসির মঞ্চ, নুসরাত হত্যার আসামীদের নেয়া হচ্ছে কুমিল্লা-চট্টগ্রামে

ফেনীর বহুল আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের কুমিল্লা-চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছে।

ফেনী জেলা কারাগারে পৃথক কনডেম সেল ও ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় তাদের কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার এ সব আসামিকে পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার।

কারাগার স্থারন্তরের বিষয়টি সোমবার বিকালে অনুমোদন দিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা।

ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের সোমবার জানান, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১৪ জনকে কুমিল্লা ও দুইজন নারী আসামিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। এদের মধ্যে ১৩ জনকে মঙ্গলবার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো প্রস্তুতি নিচ্ছেন কারা কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরও জানান, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ১৩ তারিখ আদালতে মামলার দিন ধার্য আছে। এ জন্য আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে ওই দিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।

বুধবার মহিলা আসামি কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা ওরফে পপিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।

২৪ অক্টোবর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। আসামিদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হল অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, যে সব আসামির দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড হয়, সে সব আসামির জেলা কারাগারে না রেখে নিরাপত্তাজনিত কারণে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর জন্য কারাবিধিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঠানো হচ্ছে।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে জনবল ও কনডেম সেলের সংখ্যা বেশি। তাদের পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সেখানে রয়েছে। ফেনী জেলা কারাগারে ফাঁসির কোনো মঞ্চ নেই, সেখানে সব রয়েছে।

Share this post

scroll to top