ফুল বিপ্লবে নানা পদক্ষেপ

কুড়িগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ফুল চাষ। এতে করে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফুল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষক। জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ যৌথ উদ্যোগে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ফুল চাষে আগ্রহী করে তুলতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। মাঠ দিবসের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করাসহ দিচ্ছে নানা সহায়তা ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে নার্সারী পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে কিছু ফুল চাষ ও চারা উৎপাদন হলেও বাণিজ্যিক ভাবে ফুল চাষ শুরু হয়েছে জেলায় এবারই প্রথম। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলাসহ, রাজারহাট, ফুলবাড়ী এবং নাগেশ্বরী উপজেলায় কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এ ফুল চাষ শুরু করছেন। এতে করে অন্যান্য ফসলের চেয়ে অল্প সময়ে বেশি লাভ হয়েছেন চাষীরা। তাদের দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অন্যান্য কৃষক।

ফুল চাষী রফিকুল জানান, যশোর থেকে আনা রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্র মল্লিকা, ক্যাবেজ, গোলাপের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত গাঁদা, প্রজাপতিসহ বিভিন্ন জাতের উন্নতমানের ফুল চাষ হচ্ছে কুড়িগ্রামে।
রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের কৃষক মরিয়ম বেগম জানান, জেলা প্রশাসক ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ৪ মাস আগে ১৬ শতক জমিতে ফুল চাষ শুরু করেন। তার বাগানে ৮ জাতের গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ নানা জাতের ফুল উৎপাদন শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রাম শহরের চালেমী পুস্পঘর, মা ফুল ঘরসহ বিভিন্ন ফুল বিক্রেতা তার নার্সারী থেকে ফুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকরাও সরাসরি কিনছেন ফুল।

এ পর্যন্ত ১২ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের তালুককালোয়া গ্রামে কৃষক মো: শাহজাহান ২০ শতক জমিতে ফুল চাষ করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। তাদের দেখাদেখি এ অবস্থায় দ্রুতই সাড়া জাগিয়েছে কৃষকদের মাঝে। তারাও ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বুলু জানান, পরীক্ষামুলক ভাবে তার ইউনিয়নের ছিনাই গ্রামে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুল চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের প্রনোদনাসহ মাঠ দিবসের মাধ্যমে উৎসাহিত করছেন। এবং ফুল চাষের সহায়তা করেছেন কয়েকজন কৃষককে। তারা সফলও হয়েছেন। তাদের দেখাদেখি অনেক কৃষক ফুল চাষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান ধান, গম, পাট ও সবজি জাতীয় ফসলের পাশাপাশি জেলায় ফুল চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন লাভবান হবেন কৃষক অন্যদিকে কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা।

জেলা প্রশাসক, মোছা: সুলতানা পারভীন জানান, এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কৃষকদের ব্যাপক হারে ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে ফুল চাষ জেলার অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্র : বাসস

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top