প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলেন এমপি শরীফ আহমেদ

মো. আব্দুল কাইয়ুম : মন্ত্রিসভার তিন সদস্যের দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের মধ্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪র্থ বারে মতো উপহার দিয়েছেন বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এর রুল ৩(৪) অনুযায়ী মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে  গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গণপূর্ত এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এদিকে কম গুরুত্বপূর্ণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন শরীফ আহমেদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে- দফতর পুনর্বণ্টনে তিনজনের মধ্যে পদোন্নতি হয়েছে শরীফ আহমেদের। তিনি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এটা তার কাজের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টির উপহার।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসন থেকে পরপর দু’বারের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ। ফুলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা ভাষাসৈনিক মরহুম এম শামছুল হক একই আসনে ৫ বার সংসদ সদস্য ও একবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৭০ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন শরীফ আহমেদ। তিনি ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৯৭ সালে আনন্দ মোহন কলেজ ময়মনসিংহ থেকে ইতিহাসে বিএ পাস করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি শেফালী বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। তাদের ঘরে ওয়াসেক আহমেদ ও তাসফিয়া আহমেদ নামে দুই ছেলেমেয়ে আছে।

অপরদিকে আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের হঠাৎ দফতর পুনর্বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেকের ধারণা- দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণেও নিজ দফতর থেকে কাউকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হতে পারে। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া এক মন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ঝামেলার কথা শুনে আসছি। সম্ভবত এমন কোনো অসঙ্গতি থেকেই এটা করা হয়েছে। না হলে এ মুহূর্তে হঠাৎ করে মাত্র তিনটি দফতর পুনর্বণ্টন আলোচনায় আনার মতো কিছু ছিল না।

আওয়ামী লীগের একজন উচ্চপর্যায়ের নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মন্ত্রিসভায় একটি বড় পরিবর্তনের আভাস চলছে দীর্ঘদিন থেকেই। এটা যে কোনো মুহূর্তেই ঘোষণা হতে পারে। তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দফতর পুনর্বণ্টনের সঙ্গে সেই বড় পরিবর্তনের সম্পর্ক নেই। সেখানে মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে। এ সংখ্যা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫৮ পর্যন্ত হতে পারে। সেখানে আসতে পারে একাধিক নতুন মুখ, যারা আগে কখনও মন্ত্রিসভায় ছিলেন না।

পাশাপাশি আগে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন- এমন নেতাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। দফতর পরিবর্তন হতে পারে বর্তমান মন্ত্রিসভার কোনো কোনো সদস্যের। এছাড়া কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর পদোন্নতি হতে পারে, যাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দলীয় কোনো পদে রাখা হয়নি।

৪৮ সদস্যবিশিষ্ট বর্তমান মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী ২৫, প্রতিমন্ত্রী ১৯ ও উপমন্ত্রী ৩ জন রয়েছেন। এ মুহূর্তে আটটি মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী নেই। সেগুলো হচ্ছে- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আছে জনপ্রশাসন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন মন্ত্রিসভায় যারা নতুন যোগ হবেন অথবা যারা পদোন্নতি পাবেন।

Share this post

scroll to top