বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সেলিমা রহমান বলেছেন, মধ্যরাতে ভোট কেটে নেয়া সরকার আজ সামান্য একটি পিন পড়লেও আঁতকে উঠছে। বিএনপির নাম শুনে তারা ভয় পাচ্ছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা স্কুল-কলেজের ছেলেদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে ভিন্নমত দমন করতে চাইছে সরকার। কথা বললেই তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে হয় জেলে ঢোকাচ্ছে নয়তো খুন-গুম করছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে এভাবে আর কতোদিন চলবে?
আজ শনিবার বিকেলে শহরের গোয়ালচামট পানি ওয়াপদা রেস্ট হাউসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সেলিমা রহমান। বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ফরিদপুরে বিএনপিকে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টায় শহরের অম্বিকা ময়দানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে দুপুর হতেই সমাবেশস্থল অম্বিকা ময়দানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়। পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীরাও সেখানে সমবেত হতে থাকেন। বিকেলে নেতৃবৃন্দ সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে চাইলে কোতয়ালী থানার ওসির নেতৃত্বে তাদের বাধা দেয়া হয়।
সেলিমা রহমান ভারতের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি সম্পাদিত চুক্তির সমালোচনা করে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র যা চাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে অন্ধকারে রেখে তাই দিচ্ছেন। দেশ কারবালা হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তাদের নজর নেই। তাদের নজরদারি আছে শুধু অবৈধভাবে জোর করে ক্ষমতা দখল করে রাখার দিকে। একারণে তারা ছাত্রলীগ, যুবলীগের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে ভিন্নমতকে দমন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, দেশের সব জেলাতেই আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ হচ্ছে। সকালেও আমাদের জানিয়ে দেয়া হলো যে সমাবেশে কোন বাধা নেই। কিন্তু দুপুরেই থানার ওসি সাহেব আমাদের বললেন যে, সমাবেশ করা যাবে না। জীবন দিয়ে হলেও তারা সমাবেশ করতে দিবেন না। আজকে আমরা ভোট দিতে পারব না। মিটিং করতে পারব না। নিজের মত প্রকাশ করতে পারব না-এ কেমন কথা। তিনি দেশব্যাপী দুর্নীতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ওনারাই দুর্নীতি করবে, ওনারাই স্বৈরাচারী আচরণ করবে, ওনারাই মানুষ খুন করবে আবার ওনারাই মানুষকে অ্যারেস্ট করবে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এখন নিজের ছায়া দেখলেই ভয় পাই।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াসমিন আরা হক, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার শাশুকুর রহমান মাসুক, সেলিমুজ্জামান, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদকা সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম লিটন, আফজাল হোসেন খান পলাশ, জুলফিকার হোসেন জুয়েল, গোলাম মোস্তফা মিরাজ, নাজমুল হাসান রঞ্জন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপিকে জনসভা করতে না দেওয়ার ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়নি। এ কারণে তাদের সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি।