পাওনা সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যাংকে পড়ে থাকলেও ত্রিশালের শ্রমিকরা আজ উপবাসী

takaত্রিশাল উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর কাজ প্রায় ৪ মাস পূর্বে সম্পন্ন করলেও উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ ইউনিয়নের শ্রমিকরা এখনো তাদের পাওনা টাকা উত্তোলন করতে পারেনি। অথচ অনেক শ্রমিকই তাদের পরিবার নিয়ে উপবাসে দিন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

করোনার এ মহাবিপর্যয়ের সময়ে অসহায় দরিদ্র শ্রমিকরা টাকা উত্তোলন করতে না পেরে চরম দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। প্রত্যেক শ্রমিকের প্রায় আট হাজার টাকা করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সর্বমোট প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আটকে আছে ব্যাংকগুলোতে। শ্রমিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় এ নিয়ে শ্রমিকসহ সাধারন মানুষের মাঝে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা চলছে।

জানা গেছে, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে কর্মসৃজন কর্মসূচীর আওতায় হত দরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসূচী ২০১৯ সালের ডিসেম্বর ও ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলায় মোট ৪ হাজার ৮ শত ৮৭ জন শ্রমিকের কর্মসূচীর কাজের টাকা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করার কথা থাকলেও ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও অধিকাংশ শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক দরিদ্র শ্রমিক অভিযোগ করেন বর্তমানে করোনা’র মহাদুর্যোগের সময়ে আমাদের পরিশ্রমের টাকা আটকে রেখেছে। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছি। দ্রুত আমাদের টাকা না দিলে আমাদেরকে না খেয়ে মরতে হবে।

ধানীখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুল্লাহ আছাদ জানান, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারনে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পাচ্ছেনা শ্রমিকরা।

তিনি আরো বলেন, এ দুর্যোগপূর্ণ সময়ে শ্রমিকরা টাকা পেলে তাদের ভীষন উপকার হতো। ত্রিশাল সদর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ আমিন জানান, আমাদের সকল প্রক্রিয়ার কাজ শেষ। কিন্তু করোনার কারনে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারছেনা শ্রমিকরা।

সাখুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ গোলাম ইয়াহিয়া জানান, আমার ইউনিয়নের কোন শ্রমিক এখনো টাকা উত্তোলন করতে পারেনি। পুবালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখায় টাকা উত্তোলনের বিষয়ে যোগাযোগ করেও কোন ফলাফল পাচ্ছিনা। এ সময়ে টাকা উত্তোলন করতে না পেরে শ্রমিকরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

অপরদিকে ত্রিশাল রূপালী ব্যাংক ম্যানেজার শওকত আলী জানান, আমি টাকা দেওয়ারর জন্য গত মঙ্গলবার ত্রিশাল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ আমীনকে ফোন দিয়ে তাগিদ দিয়েছি।

ত্রিশালের কাশিগঞ্জ কৃষি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মোসলেম উদ্দিন জানান, আমার ব্যাংক থেকে ৩টি ইউনিয়নের শ্রমিকদের টাকা উত্তোলন করে থাকে। কিন্তু ব্যাংকে অন্যান্য কাজ থাকায় টাকা বিতরণ করা সম্বব হচ্ছেনা।

ত্রিশালের বালিপাড়া রূপালী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার বিশ্বজিৎ রাহা শ্রমিকদের টাকা বিতরনের ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

ত্রিশাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে তাদের টাকা উত্তোলন করতে পারবে।

Share this post

scroll to top