পদ্মাসেতুর মতো টিআইবির অনেক রিপোর্টই একপেশে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, টিআইবির অনেক রিপোর্টই একপেশে ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিশ্বব্যাংকের মতো পদ্মাসেতুর কাল্পনিক দুর্নীতি অভিযোগ তুলে কানাডার আদালতে তা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পরও তার জন্য ক্ষমা চায়নি সংস্থাটি।

সোমবার (১৫ জুন) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবির কাজ শুধু দোষ খুঁজে বেড়ানো। গত সাড়ে ১১ বছর আমাদের দেশ পরিচলনার কোনো কাজে টিআইবি সরকারের প্রশংসা করতে পারে না। অথচ ‘এই টিআইবি বড় গলায় বলেছিল পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। যখন কানাডার আদালতেও বিশ্বব্যাংক হেরে গেল, টিআইবির তখন জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন ছিল। এমন বহুক্ষেত্রে টিআইবি প্রমাণ করেছে, তারা প্রকৃতপক্ষে সঠিক গবেষণাপ্রসূত কোনো রিপোর্ট পেশ করে না। তাদের সবগুলো না হলেও অনেক রিপোর্টই একপেশে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

‘‘তাদেরকে অনুরোধ জানাবো- যেন তারা তাদের প্রধান কার্যালয় জার্মানী এবং ইউরোপের অন্যান্য যেসমস্ত দেশ থেকে অর্থ পায়, সেখানকার পরিস্থিতির সাথে বাংলাদেশের তুলনা করে। তাহলেই সেখানকার তুলনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি তারা বুঝতে পারবে, বলেন ড.হাছান মাহমুদ।

বিএনপির সাম্প্রতিক বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যেও বিএনপির নেতাদের ভাষা রাজনৈতিক বিদ্বেষপূর্ণ। আমরা আশা করেছিলাম, তারা অন্যান্য দেশ এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কাছ থেকেও শিখবে। ভারতে বিরোধীদলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর প্রথমেই চিঠি লিখে সরকারকে জানিয়েছেন যে, ভারত সরকার যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে, সেগুলো তারা সমর্থন করেন এবং এই দুর্যোগে তারা সরকারের পাশে আছেন। বাংলাদেশে বিএনপি সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলা, এটি একটি যুদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বয়স ৭৪ বছর, তিনি এক মুহূর্তও বসে নেই। তিনি প্রতিদিন কাজ করছেন, জেলা ও বিভাগীয় সদরের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, সংসদ অধিবেশনে প্রতিদিন অংশগ্রহণ করছেন। আমরা প্রত্যেকেই জানি, যে কোনো মুহূর্তে আক্রান্ত হতে পারি, এরপরও আমরা বসে নেই। দাপ্তরিক কাজ যেমন করছি, রাজনৈতিক কাজও করছি। একই সঙ্গে নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে শুরু করে নিজ জেলার কাজগুলোও যতটা সম্ভব তদারকির চেষ্টা করছি।’

মানুষের মাঝে কাজ করতে গিয়েই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম ও শেখ আবদুল্লাহ- উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দলের যে সমস্ত নেতা ও সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেন কিংবা চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারাও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন। এগুলো প্রমাণ করে, আমাদের দলের কেন্দ্রীয় এবং মাঠ পর্যায়ের নেতা ও সংসদ সদস্যরা জনগণের পাশে থাকতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে। এই যুদ্ধের মধ্যেই নিজেকে যতটুকু সম্ভব সুরক্ষায় রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা নেই -বিএনপি’র এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের প্রাণান্তকর চেষ্টায় এখনো বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্বের উন্নত এমনকি প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় ভালো রয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরো উন্নতির জন্য সরকার নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ যে সুস্থ হলো, তারা সেগুলো দেখেন না। হাজার মানুষ যে হাসপাতালে আছে এবং সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে চোখ থাকতেও যারা অন্ধের মতো সেগুলো দেখেনা, তাদের চোখে তো আলো দেয়া সম্ভবপর নয়।’

‘এই সময় বিষোদগারের রাজনীতি পরিহার হোক -এটিই বিএনপি’র কাছে আমার অনুরোধ’ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘আপনাদের গতানুগতিক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এগুলো পরিহার করুন, জনগণের পাশে থাকুন। আপনারা লোক দেখানো কয়েকটা ফটোসেশন করবেন আর নিজেকে সুরক্ষিত রেখে প্রেস ব্রিফিং করে সেখানে বিষোদগার করবেন, এই সময় এটি সমীচীন নয়, জনগণ এটি কামনা করে না। তাই আসুন একসাথে কাজ করি- বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সম্পাদক।

Share this post

scroll to top