নেত্রকোনায় ট্রলার ডুবিতে ময়মনসিংহের একই পরিবারের ৭জন নিহত

Dead-Netrokona-tralarনেত্রকোনা জেলার মদনের উচিতপুরে ট্রলার ডুবিতে নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের বাড়ি ময়মনসিংহে। সদর উপজেলার কোনাপাড়া গ্রামের একই পরিবারের সাতজন ও সাতজন মাদরাসা শিক্ষকসহ নিহতদের বাড়িতে এখন শোকের মাতম। বুধবার বিকেলে নিহতদের পরিবারের মাঝে মর্মান্তিক দুঃসংবাদটি পৌছার পরপরই আত্মীয় স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে এসে তাদেরকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে। পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষা করছেন কখন মরদেহ এবং বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো বাড়ি ফিরে আসবে।

এলাকাবাসি জানান, সদর উপজেলার চরখরিচা কোনাপাড়া বাজারস্থ ‘মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহ’র মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে কোনাপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষকদের একটি সমিতির মাধ্যমে ১৯ জন শিক্ষক ও দু’জন শিক্ষার্থীসহ ৪৮ জনকে নিয়ে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার পর্যটন খ্যাত ‘মিনি কক্সবাজার’ উচিতপুরে জামিয়া আজিজিয়া মঈনউল ইসলাম মাদ্রাসার আমন্ত্রণে বেড়াতে যান। সন্ধ্যায় সদরের ওই কোনাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। কেউ কেউ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ওই গ্রামের ঘরে ঘরে যেন কান্নার রোল। কেই কেউ লাশের অপেক্ষায় রাস্তায় পথ চেয়ে আছেন।

নেত্রকোনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সায়িদের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। চরসিরতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সায়িদ জানান, খবর পেয়েই তিনি ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি লাশগুলো গ্রহন করেন এবং রাতেই লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান। নিহতরা হলেন, ‘মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহ’র মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান (৪৫), তার ছেলে হাফেজ মাহবুবুর রহমান আসিফ (১৫) ও মাহমুদুর রহমান (১২), ভাতিজা কোনাপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে জোবায়ের (২২) ও মুজাহিদ মিয়া (১৭), ভাগিনা একই গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম (১৬) ও মোবাইল ব্যবসায়ি জাহিদ (২০), চরখরিচা গ্রামের কৃষক ইসা মিয়া (৪০) ও তার ছেলে শামীম (১০), কোনাপাড়া গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইদ্রিস আলীর ছেলে মাদরাসা শিক্ষক হামিদুল (৩৫), আব্দুর রশিদের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রতন (৩০), লক্ষীপুর গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম (৩৫), কোনাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক রাকিব (২০) ও চরগোবিন্দপুরের তালেব মেম্বারের ছেলে শহিদুল (৪০) এবং গৌরীপুর উপজেলার ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে শফিকুর রহমান (৪০) ও তাঁর ছেলে সামাআন (১০)।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজজ্জামান জানান, করোনা মহামারিতে শিক্ষকদের ভ্রমন করার প্রোগ্রাম করা উচিত হয়নি। খামখেয়ালিপনার কারনেই এতগুলো মানুষের প্রাণ ঝড়ে গেলো। ##

Share this post

scroll to top