নেত্রকোনায় গায়ে কাঁদা মেখে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রিফাত আহমেদ রাসেল, দুর্গাপুর(নেত্রকোনা): নেত্রকোনার দুর্গাপুরের প্রায় সবগুলো সড়ক যেনো দিনে রাতে ২৪ ঘন্টাই দখল করে রেখেছে  ৬ চাকার অবৈধ লড়ি গাড়ি। মূলত কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য এই গাড়ি গুলো তৈরী করা হলেও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী এই গুলোকে ব্যবহার করছে বালু, পাথরসহ নানারকম মালামাল পরিবহনে।

বর্তমানে লাইসেন্স বিহীন অবৈধ যান কাল হয়ে দাড়িয়েছে দুর্গাপুরে। পৌর শহরের অলি গলি থেকে শুরু করে সকল সড়কেই অবাধ চলাচল লড়ির। আর ভেজা বালু পরিবহন করায় পৌষ মাসের এই কনকনে শীতেও রাস্তায় পানি আর কাঁদার কারণে চলাচল করতে পারে না পথচারী ও শিক্ষার্থীরা।

এই দিকে পৌর শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর যাতায়াতের একমাত্র সড়ক সাধুপাড়া এলাকার সড়কের যেনো করুন অবস্থা। সরকারী বেসরকারী স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে এই সড়কের পাশেই। কিন্তু প্রতিদিন শত শত অবৈধ লড়ি চলায় সড়কে তৈরী হচ্ছে নতুন নতুন খানাখন্দের। এই খানাখন্দে পড়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনাও। তার উপর ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে জ্যাম লেগে থাকায় সময় মত বিদ্যালয়েও আসতে পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় ফিটনেসবিহীন এইসব যানের তিব্র শব্দে একটি দিকে যেমন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ তেমনি তিব্র শব্দের কারণে শ্রেণী কক্ষে বসে পড়ালেখাও করতে পারচ্ছেনা বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

আর এর প্রতিবাদ জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে পৌর শহরের সাধুপাড়া এলাকায় দি চাইল্ড নার্সিংহোম, অবাইদুল্লাহ ক্যাডেট মাদ্রাসা, সুসং আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবকরা এসব অবৈধ যানের বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। এই সময় তারা গায়ে কাদা মেখে পৌর শহরের বেশ কিছু সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হন ।

এই সময় শিক্ষার্থীরা ভিজা বালি পরিবহন বন্ধ, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো বন্ধ সহ সড়কের পুরোপুরি লড়ি গাড়ি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন । পরে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার আশ্বাসে বিদ্যালয়ে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। তবে  অবৈধ এই যান বন্ধ না হলে আবারো সড়কে নামবেন বলে জানায় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

দি চাইল্ড নার্সিংহোম শিক্ষক শিমুল জানায়, আমরা শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে পড়াতে পাড়িনা এই লড়ি গাড়ির জন্য। এই গাড়ি গুলো যখন সড়ক দিয়ে যায় এত তিব্র শব্দ মনে হয় সবকিছ’ ভেঙ্গেচুরে যাচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরা দিনদিন অমনোযোগী হয়ে পড়ছে । আর এর প্রভাব পড়ছে লেখাপড়ায়। আমরা চাই অবৈধ এই যান বন্ধ হোক।

স্থানীয় এক অভিবাবক জানায়, গাড়িগুলো ভেজা বালু পরিবহন করায় সড়ক দিয়ে চলাচল করা যায় না। সড়কের ময়লা পানি শিক্ষার্থীদের গায়ে ছিঁটে বই খাতা সহ জামা কাপরও নষ্ট হয়ে যায়। আর যে ভাবে এই সব গাড়ি চলে একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নিবে ? তাই আমার বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও ভয় হয়।

Share this post

scroll to top