নেত্রকোণায় অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব

নেত্রকোণার চাঞ্চল্যকর অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন এবং মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১৪’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন জানান, ১৯ নভেম্বর সকালে নেত্রকোণার পূর্বধলা থানার খলিশাউড় ইউনিয়নের বালুচড়া বাজারের তালতলা মোড় এলাকার রাস্তার পাশে এক অজ্ঞাতনামা মহিলা (২৬)-এর মৃতদেহ পড়ে থাকে। পরে পূর্বধলা থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে লাশের ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এদিকে প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাত মহিলার পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব। পরে এই ঘটনার ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন করে গাজীপুর জেলার মীরের বাজার এলাকা থেকে মূলহোতা পূর্বধলা থানার আগিয়া গ্রামের মো: নিজাম (৩০)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে এবং হত্যাকান্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নিজাম জানায়, আসামী নিজে, আসামীর স্ত্রী ও ভিকটিম কমলা খাতুন একইসাথে গার্মেন্টসে কাজ করতো। সেই সুবাদে আসামীর সাথে ভিকটিমকমলা খাতুনের প্রায় চার মাসের পরিচয়। পরবর্তিতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আসামী নিজাম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা হওয়া সত্ত্বেও কমলাকে বিয়ের চাপ দেয়। কিন্তু কমলা তাকে বিয়ে করতে রাজি না হলে নিজামের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যেকারণে আসামী নিজাম কমলাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। হত্যার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী নিজাম ভিকটিম কমলাকে তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার দুর্গাপুর পৌছে দেওয়ার জন্য কৌশলে রাজি করায়। ঘটনার দিন সকালে আসামী নিজাম গার্মেন্টসে কাজ করে বাসায় ফিরে আসে। এরপর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় হত্যার উদ্দেশ্যে বাজারের ব্যাগে একটি কাপড়ে মোড়ানো ধারালো দা নিয়ে নেয়। পথিমধ্যে আসামী নিজাম ভিকটিম কমলাকে দুর্গাপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাস্তা থেকে তুলে নেয় এবং দুর্গাপুর যেতে থাকে। এরপর নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার তালতলা বাজার এলাকার রাস্তার পাশে পৌছালে আসামী নিজাম ভিকটিম কমলাকে কৌশলে গাড়ি থেকে রাস্তায় নামায় এবং কমলাকে রাস্তা থেকে নিচে নামতে বললে কমলা তাতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে আসামী নিজাম ক্ষিপ্ত হয়ে জোর করে ধাক্কা দিয়ে কমলাকে নিচে নামায়। তখন কমলা ভয়ে চিৎকারে চেষ্টা করলে গলা চেপে ধরে। তখন কমলা বাচাঁর জন্য ছটফট করলে উপর্যুপরি গলা চেপে কমলার মৃত্যু ঘটায়। এরপর মৃতু্য নিশ্চিত করতে নিজাম তার সাথে নিয়ে আসা ধারালো দা দিয়ে ভিকটিমের পেটে গুরুতর জখম করে পেট থেকে ভুড়ি বের করে ফেলে। ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা এড়াতে ও পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সে দ্রুত গাজীপুর চলে যায়।

Share this post

scroll to top