নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়ার কথা বলে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ

নরসিংদীর মনোহরদীতে নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়ার নামে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার একজন আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতিভূষন প্রামানিক ও অন্যজন প্রশিক্ষক নাজমুল হাসান।

এদিকে এই ঘুষ-দুর্নীতির সাথে বিভিন্ন ইউনিয়ন দলনেতা এবং কিছু ভিডিপি সদস্য জড়িত বলে জানা গেছে। চাহিদামত টাকা না দেয়ায় পূর্বে দায়িত্ব পালনকারী অনেক আনসার ও ভিডিপি সদস্যকে এবার নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগও এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১২জন করে আনসার ও ভিডিপি সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। সে হিসেবে মনোহরদী উপজেলায় ৯৬টি ভোটকেন্দ্রে এক হাজার ৫২জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন। এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে অগ্রীম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে প্রায় ৭ লাখের অধিক টাকা হাতিয়ে নেন ওই দুই কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোতাশিয়া ইউনিয়নের এক নারী আনসার সদস্য বলেন,‘নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য আমার এলাকার দলনেতার কাছে অগ্রীম ৭০০ টাকা জমা দিয়েছি।’

এদিকে কাচিকাটা ইউনিয়ন আনসার দলনেতা মোঃ শহিদুল্লাহ জানান,‘আমার ইউনিয়নে একশ ২০জন সদস্যদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছি।’

তাছাড়া ভিডিপি’র এক ইউনিয়ন নারী দলনেতা দুঃখ করে বলেন,‘দায়িত্বের আশায় ধারদেনা করে দাবীকৃত টাকা জমা দেন নিরীহ আনসার সদস্যরা। গরীব সদস্যদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আদায় করতে খুব কষ্ট লাগে। তারপরও অফিসারদের মন রক্ষা করার জন্য এসব টাকা উত্তোলন করতে হয়।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক নাজমুল হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে তার কার্যালয়ে চায়ের দাওয়াত দেন।

অন্য অভিযুক্ত উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতিভূষন প্রামানিক বলেন,‘নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে কোনো প্রকার উৎকোচ গ্রহণ করা হয়নি। আমার নাম ব্যবহার করে যদি কেউ অর্থ আদায় করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত উপজেলা প্রশিক্ষক নাজমুল হাসান কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন নির্বাচন ও দুর্গাপূজায় দায়িত্ব দেয়ার নামে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল।

এদিকে তিনি অত্র উপজেলায় আসার পর থেকে একই কায়দায় ভিডিপির প্রশিক্ষণের সময় টাকা ছাড়া কাউকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top