ধর্মীয় আলোচনায় বাধা ও মাদ্রাসার ছাত্রদের উপর হামলার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ

Mymensingh Mahfilধর্মীয় আলোচনায় বাধা,ওয়াজ মাহফিল বন্ধ ও মাদ্রাসার ছাত্রদের উপর হামলার প্রতিবাদে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর আয়োজনে শত শত তৌহিদী জনতার উপস্থিতিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ (২২জানুয়ারি) শুক্রবার বাদ জুমা,ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদ চত্বরে,ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর মজলিসে শূরার সভাপতি আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এতে অংশগ্রহণ করে ময়মনসিংহ শহর সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শত শত তৌহিদী জনতা।

মুফতি শরিফুর রহমানের সঞ্চালনায়,বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সা’দী,বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব আল্লামা আব্দুল হক,ইত্তেফাকুল উলামা কেন্দ্রীয় ফতোয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক,আল্লামা আনোয়ারুল হক, মুফতি আহমদ আলী,মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন,মুফতি মাহবুবুল্লাহ্,মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা জাকারিয়া,মাওলানা আবু হানিফা নোমান,মাওলানা মুহাম্মদ,মাওলানা নুরুল আবসার মাসুম,মুফতি আমীর ইবনে আহমাদ,শাহ মোশাররফ,মুফতি গোলাম মাওলা ভূঁইয়া,মাওলানা রশিদ আহমদ ফেরদৌস,মুফতি আকরাম হোসাইন ও মাওলানা চৌধুরী নাসির আহমাদ প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন,ওয়াজ মাহফিলগুলো দ্বীনের প্রচার-প্রসার ও জনমানুষের ধর্মীয় জ্ঞানের চাহিদা পূরণসহ সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও সুনাগরিক গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে থাকে। এই মাহফিলগুলোতে ধর্মীয় জ্ঞানে প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী স্কলারগণ কুরআন হাদীসের আলোকে জাতীকে ধর্মীও নির্দেশনার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করে থাকেন। যা তাদের অপরিহার্য দায়িত্ব।
কিন্তু সম্প্রতি দেশের প্রখ্যাত শীর্ষ আলেমদেরকে তাদের দ্বীনি দায়িত্বপালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন,গত ১৯জানুয়ারি মঙ্গলবার ময়মনসিংহের বড় মসজিদে সা’দপন্থীদের কতিপয় দুষ্কৃতিকারী জামিয়া ফয়জুর রহমানের১৩,১৪জন নিরীহ ছাত্রকে বিনা কারণে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করে। সা’দপন্থীরা বহিরাগতদের সহযোগিতায় এই হামলা চালিয়েছিলো। আমরা এর তীব্র নিন্দা,প্রতিবাদ ও দোষীদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

পরে সমাবেশের শেষমুহুর্তে ইত্তেফাকুল উলামার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সমাবেশের ঘোষণাপত্র পড়ে শুনান।
ঘোষণাপত্রটি নিম্নরূপ ১.দেশোর বিভিন্ন স্থানে বিশেষত চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি,কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের মাদ্রাসায় হামলা,ভাঙ্গচুর,নিরীহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ নির্যাতন ও হয়রানীর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের পাশাপাশি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে এই সমাবেশ।
২.শীত মৌসুমে ওয়াজ মাহফিল এই দেশের চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ, কিন্তু সম্প্রতি আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিলগুলোতে বাধা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হচ্ছে। নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। মাইক খুলে নিয়ে আসা হচ্ছে,মঞ্চ ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। আয়োজকদেরকে হয়রানী করা হচ্ছে। বক্তাদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে। আতংক সৃষ্টি করে ওয়াজ মাহফিলগুলো বন্ধের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আজকের এই সমাবেশ সকল বাধা অপসারণ করে শর্তহীনভাবে ওয়াজ মাহফিল বাস্তবায়নের পথ নির্বিঘ্ন করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।
৩.মাহফিলগুলো দ্বীনের প্রচার-প্রসার ও জনমানুষের ধর্মীয় জ্ঞানের চাহিদা পূরণসহ সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও সুনাগরিক গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে থাকে। এই মাহফিলগুলোতে ধর্মীয় জ্ঞানে প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী স্কলারগণ কুরআন হাদীসের আলোকে জাতীকে ধর্মীও নির্দেশনার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করে থাকেন। যা তাদের অপরিহার্য দায়িত্ব। কিন্তু সম্প্রতি দেশের প্রখ্যাত শীর্ষ আলেমদেরকে তাদের দ্বীনি দায়িত্বপালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
সাংবিধানিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদেরকে হেনেস্তা করা হচ্ছে। ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। সমাবেশ থেকে এসকল ঘৃণ্যআচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
৪.প্রতি শুক্রবার জুমার বয়ানে মুসলমানদের ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন খতীবগণ। মসজিদের মিম্বার কুরআন-হাদীস ও দ্বীনি বিষয়াদি বর্ণনার জন্যই নির্ধারিত এবং যুগযুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে। সম্প্রতি মসজিদের খতীবদের মুক্ত স্বাধীন কণ্ঠকে নানা বিধিনিষেধ ও সরকারী বাধ্যকতায় অবরুদ্ধ ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত ১১জানুয়ারি ইসলামীক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রেরিত এক চিঠিতে, প্রতি জুমার খুৎবার পূর্বে কম্পক্ষে ১০মিনিট সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আলোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা মসজিদের মিম্বার ও ধর্মীয় বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে আমরা মনে করি।
ইমাম খতী ও আলেমগণ এধরণের ধর্মীয় বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ মেনে নিতে পারেন না। তাই অনতিবিলম্বে এই নির্দেশনা বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে এই সমাবেশ।
৫.গত ১৯জানুয়ারি মঙ্গলবার ময়মনসিংহের বড় মসজিদে সা’দপন্থীদের কতিপয় দুষ্কৃতিকারী জামিয়া ফয়জুর রহমানের১৩,১৪জন নিরীহ ছাত্রকে বিনা কারণে মেরে মারাত্মকভাবে আহত করে। এই সা’দপন্থীরা বড় মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদের ভ্রান্তমতবাদ প্রসার করতে গেলে উপস্থিত মুসুল্লিরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে সা’দপন্থীরা বহিরাগতদের সহযোগিতায় সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। তাদের জন্য তাবলিগের সমস্ত পরিভাষা নিষিদ্ধ করতে হবে। আজকের এই সমাবেশ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের আগামি ৪৮ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।
সেই সাথে বড় মসজিদ সহ ময়মনসিংহের সকল মসজিদে তাদের সকল কার্যক্রমের নিষিদ্ধ ঘেষণা করছে।

Share this post

scroll to top