নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের লাশ নিতে বাইরে অপেক্ষমান স্বজনরা। অনেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। স্বজনদের কান্না যেন থামছেই না।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, গেটের বাইরে ভাইয়ের লাশ নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন রোজিনা বেগম। তিনি বলেন, আমার ভাই ওখানে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তার ছোট ছোট দুই সন্তান রয়েছে। আমার ভাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। কালকে এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাবে আমাদের জীবনে সেটি কখনো ভাবিনি।
আহত মামুনের স্ত্রী আরজু বেগম বলেন, আমরা এখনো ভেতরে যেতে পারিনি। আমার স্বামী কেমন আছে বলতে পারছি না। আপনারা সবাই আমার স্বামীর জন্য দোয়া করবেন। আমার একটি ছোট্ট সন্তান রয়েছে। ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আল্লাহ যেন আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়।
বাইরে ওয়েটিংরুমে কান্না করছিলেন সেলিম মিয়া ও কুলছুম বেগম। তারা বলেন, আমাদের তিন ছেলে অগ্নিদগ্ধ। দুই ছেলে মারা গেছে। আরেকজন চিকিৎসাধীন। আল্লাহ আমাদের এ কেমন পরীক্ষার মধ্যে ফেলল।
পাশে কান্না করছিলেন আরেক অভিভাবক মনির হোসেন। তিনি বলেন, ছেলেটাকে অর্থের অভাবে বেশিদিন পড়াশোনা করাতে পারেনি। একটি ভ্যান চালাত। শুক্রবার দিন আসার সময় এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেল। যা আমার জীবনের সব আশা শেষ করে দিল। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করে তোলে, আপনাদের কাছে দোয়া চাই।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, সবার মেজর বার্ন আছে। সবার অবস্থা খারাপ।
এদিকে, শনিবার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, যে ১৩ জন মারা গেছেন, তাদের স্বজনরা যেভাবে লাশ নিতে চাইবেন আমরা সেভাবেই দেবো। সেক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হতে পারে। তবে তার আগে তাদের অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।