তৃণমূলের নেতা শরীফ আহমেদ

মো. আব্দুল কাইয়ুম : বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও তৃণমূলের নেতা শরীফ আহ্‌মেদ তৃণমুল রাজনীতিতে একজন মহৎ হৃদয়ের সফল মানুষ হিসেবে সুপরিচিত মুখ। মূলত: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও নিজ পিতার রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শরীফ আহ্‌মেদ ছাত্র জীবনেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।

মন্ত্রিসভার তিন সদস্যের দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের মধ্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪র্থ বারে মতো উপহার দিয়েছেন বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রধানমন্ত্রী রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এর রুল ৩(৪) অনুযায়ী মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পুনর্বণ্টন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে  গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গণপূর্ত এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এদিকে কয়েকদিন আগে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন শরীফ আহমেদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে- দফতর পুনর্বণ্টনে তিনজনের মধ্যে পদোন্নতি হয়েছে শরীফ আহমেদের। তিনি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এটা তার কাজের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টির উপহার।

তৃণমূল থেকে উঠে আসা শরীফ আহ্‌মেদ ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তিনি ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য।

শরীফ আহ্‌মেদ ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তৃণমূলে বিপুল কর্মীবাহিনী তার রাজনৈতিক জীবনের প্রধান চালিকাশক্তি। রাজনৈতিক জীবনে ২০১৩ সালে জনগণ তাঁকে তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত করেন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তিনি দশম জাতীয় সংসদের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শরীফ আহ্‌মেদ ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া গ্রামে ১৯৭০ সালের ২৫শে জানুয়ারি এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ভাষাসৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা জননেতা শামছুল হক পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং একবার উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শামছুল হক ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের খুব কাছের রাজনৈতিক সহচর হিসাবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যিনি বাংলাদেশের তথা তৎকালীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার একজন নীতিবান, আদর্শবান এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া অত্যন্ত প্রতাপশালী একজন রাজনীতিবিদ ও জননেতা ছিলেন।

শরীফ আহ্‌মেদ এর মাতা একজন রত্নগর্ভা যিনি সবসময় পরিবারকে অনুপ্রেরনা দিয়েছেন। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি তার সব সন্তানদেরকে সুযোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিন ভাই ও তিন বোন মোট ছয় ভাইবোনের মধ্যে জনাব শরীফ আহ্‌মেদ পঞ্চম।

তিনি স্কুলজীবনে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি অর্জনসহ কৃতিত্বের সাথে এস এস সি পাশ করেন। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর রাজনীতিতে হাল ধরার জন্য তিনি নিজ এলাকা ময়মনসিংহের ফুলপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে ক্রীড়াঙ্গনে ছিল তার অবাধ বিচরণ। ফুটবল ও ক্রিকেটে ছিল তার অসাধারণ কৃতিত্ব। পরিচিত ও বন্ধুমহলে তিনি প্রাণবন্ত, উচ্ছল তারুন্যের প্রতীক।

ব্যক্তিগত জীবনে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহ্‌মেদ বিবাহিত। তাঁর সহধর্মিনী শেফালী বেগম বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী দুই সন্তানের গর্বিত পিতা। প্রথম সন্তান ওয়াসেক আহমেদ ও ২য় সন্তান তাসফিয়া আহমেদ।

রাজনৈতিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতি শরীফ আহ্‌মেদ এর রয়েছে বিশেষ সম্পৃক্ততা। অবসরে একটু সময় পেলেই তিনি বই পড়ায়, গান শোনায় আর কবিতা আবৃত্তি চর্চ্চায় নিজেকে মনোনিবেশ করেন। কথা বা কাজের মাধ্যমে অতি সহজেই তিনি মানুষের হৃদয় জয় করতে পারেন এটি তার একটি বিশেষ গুন। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে দেশকে আরো উন্নত করার সংকল্পে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

Share this post

scroll to top