তামাকমুক্ত ময়মনসিংহ বিভাগ গড়ে তোলার ঘোষনা বিভাগীয় কমিশনারের

Tobacco Free Mymensinghপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বাস্তবায়নে ময়মনসিংহ বিভাগকে তামাকমুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি। তিনি বলেন ধোঁয়ায় ৭ হাজার ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে, এদের মধ্যে ৭০টি মানব দেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। তিনি অরো বলেন তামাকজনিত ব্যাধি ও অকালমৃত্যুর কারণে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ। শুধু তামাক ব্যবহারজনিত আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বছরে ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তামাকজনিত রোগে প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে বলে গত বছর এক গবেষণায় উঠে আসা তথ্যটি তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনার।

বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান আরও বলেন, তামাক প্রাণঘাতী নেশাদ্রব্য। তামাকের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় শিশুরা। দেশের অর্ধেকের বেশি, অর্থাৎ দুই কোটি শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া তামাক চাষের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি, তামাক চাষে দুর্লভ কৃষিজমি ব্যবহারের ফলে খাদ্য নিরাপত্তার হুমকি, অগ্নিকান্ডের আশঙ্কা বৃদ্ধি ও ক্ষতি এবং পরিবেশদূষণ হচ্ছে।

রবিবার দুপুরে স্থানীয় ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের বাস্তবানে করণীয় বিষয়ক এক বিভাগীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান।

তামাক বিরোধী বিদ্যমান আইন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থানসহ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ। বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ আব্দুল আলীম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এ.এইচ.এম লোকমান, সমাজসেবার বিভাগীয় পরিচালক তাহমিনা আক্তার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ ফরিদ আহমদ, ডিআইজি অফিসের পুলিশ সুপার সৈয়দ হারুন অর রশীদ, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশেনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব কুমার সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডাঃ কামাল উদ্দিন আহমদ, ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক, এডাব সভাপতি খন্দকার ফারুক আমমেদ ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম প্রমূখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থানকালে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন তামাক সেবনের কারণে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্টোক, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ, সিওপিডি, এজমা, হাঁপানি, ডায়াবেটিস, বার্জার ডিজিজ ৯পায়ে পচন ােগ)সহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ হয়ে থাকে। ৯০ ভাগ ফুসফুসে ক্যান্সার হয় ধুমপানের কারণে। পরোক্ষ ধুমপানের প্রভাবে অধুমপায়ীর হৃদরোগ, ষ্টোক, ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তামাক সেবনে দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি হয়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। গর্ভাবস্থায় তামাক সেবন বা পরোক্ষ ধুমপান গর্ভের সন্তান ও নারীর উভয়ের ক্ষতি করে। অপরিণত ও বা কম ওজনের শিশু জন্মদানের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

Share this post

scroll to top