ডাক্তার ও সাংবাদিকদেরও দিন শেষে কোয়ারেন্টাইনে থাকা উচিত

Doctor-and-Journalistকরোনার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পরেই তার উপসর্গ দেখা দেয় না। অন্তত সপ্তাহখানেক সে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে জানে। তাই কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও করোনাভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয় রোগীকে। অন্য রোগীদের কথা ভেবেই কোয়ারেন্টাইন কখনও হাসপাতালে আয়োজন করা হয় না। যাইহোকে, বর্তমান এই কঠিন সময়ে আমাদের জন্য যারা প্রচুর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তাদেরকে নিয়েও আমাদের একটু ভাবা দরকার।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) এই দু:সময়ে কঠিন দায়িত্বের বোঝা নিয়ে যারা দেশবাসীর সেবা করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ডাক্তার ও সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে পুলিশ সদস্যসহ সেনা সদস্যরাও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এই গুটিকতক পেশার কর্মীরা এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কাজটিই করছেন। দেশের মানুষের পাশে তারা এখন নিবেদিত প্রাণ হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন। এসব মানবপ্রেমিদের জন্যও আমাদের একবার ভেবে দেখা দরকার। আসুন একটু ভেবে দেখি তারা কেমন ঝুঁকিতে রয়েছেন-

প্রথমেই ডাক্তারদের কথায় আসা যাক। এ মহান পেশার লোকেরা যেকোন রোগীকে প্রথমে পর্যবেক্ষণ করেন। সে করুনাভাইরাসে আক্রান্তই হোক আর সাধারণ অন্য কোনো রোগেই আক্রান্ত হোক। প্রথম অবস্থা থেকেই একজন ডাক্তার তার উপর দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। সারাদিন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন শেষে যখন বাসায় ফেরেন তখন এই ভাইরাসের সংক্রমনের শিকার হতে পারেন তার পরিবারের সদস্যরা। সেজন্য একজন ডাক্তারকে তার পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার জন্য কোয়ারেন্টাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নিজের পরিবার নয় পাশে বসবাসরত অন্যান্য পরিবারও সংক্রমনের ঝুকিতে থাকতে পারে।

এরপর সংবাদকর্মীদের কথায় আসাযাক। সংবাদকর্মীরা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে থাকেন। সব ডাক্তারদের যেমন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সেবা দিতে হয়না , সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়না। সাংবাদকর্মীরা এই দু:সময়ে সারাদিন বিভিন্ন স্থানে যেহারে তথ্য সংগ্রহের জন্য দৌড়ঝাপ করেন তাতে তারা আরও বেশি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতাল, হাট বাজার ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ করতে হয়। তাই তাদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে স্থানীয় প্রশাসন সাংবাদিকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করে তাদের জন্য আলাাদা কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে পারেন। সাংবাদকর্মীদের ক্ষেত্রেও কিন্তু একই ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। না হয় তার পরিবারের পাশাপাশি অন্যান্য পরিবারও সংক্রমিত হতে পারে।

এই দুটি পেশার লোকেদের পাশাপাশি অন্যান্য পেশার লোকদের জন্যও সরকারের উচিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

লেখক: সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

Share this post

scroll to top