টাকার জন্যই খুন হন দুর্গাপুরের ডিজেল ব্যবসায়ী হেকমত আলী

রোববার সন্ধ্যায় হেকমত আলী দোকানের টাকা গুনতে থাকেন। এ সময় সোমেশ্বরী নদীর ১ নং ঘাটের বালু টানার লড়ি চালক স্থানীয় জালাল মিয়ার ছেলে মাসুদ দোকানেই বসা ছিলেন। মাসুদ হেকমত আলীর দোকানে প্রায়সময়ই বসতেন।

এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল হিসেবে সবার কাছেই পরিচিত মাসুদ। ওই ঘাটের নিয়ন্ত্রণ করেন দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আলা উদ্দিন আলাল। দিনরাত ওই ঘাটে অবাধে চলে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন। যা থেকে লড়ি চালক মাসুদসহ অন্যরা বালু নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। এখান দিয়ে যাওয়া আসা এমনকি ড্রেজারের তেল ও ডিজেলও নেন তারা হেকমত আলীর দোকান থেকে। ওইদিন হেকমত আলী বড় এমাউন্টের চালানের টাকা প্রস্তুত রাখেন। কিন্তু কে জানতো ওই টাকাই কাল হবে হেকমত আলীর জীবনে।

সোমবার দুপুরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে হেকমত আলীর মরদেহ নিয়ে আসা ভাতিজা আবুল কাশেম, সোহেল মন্ডল ও ভাজতি জামাই আব্দুল অলীল জানান, চাচা হেকমত আলী ১২ লাখ টাকা গুণে রাখার সময় মাসুদ তা দেখেছিলো। সোমবার টাকা তেলের কোম্পানিতে জমা দেয়ার কথা।

রাতে একটার সময় মাসুদের সাথে থাকা সিদ্দিক এক দোকান থেকে সিগারেট নেয়। এরপর রাতে দুইটার দিকে মাসুদ সিদ্দিকসহ বেশ কজন ঘরে ঢুকে টাকা নিতে চাইলে চাচা হেকমত বাধা দেন। এসময় মাথায় আঘাত করে ও গলায় দড়ি প্যাঁচিয়ে মেরে ফেলে।

ধস্তাধস্তির সময় ওই ঘাটের আরেক ড্রেজার ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া তেল নিতে আসলে মাসুদকে দেখে ফেলে।

কিন্তু মাসুদ পালিয়ে যায়। পরে চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
তারা আরো জানান, বালুর লড়ি চালক মাসুদের জন্য এলাকাবাসী অতিষ্ট। অহরহ চুরি ছিনতাই করে বেড়ায়। তাকে কেউ কিছু বলতে পারেনা। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি।

এদিকে পুলিশ জানায়, দুর্গাপুরে আত্রাখালি ব্রিজের উত্তরপাশে মধ্যমবাগান এলাকায় তেল ডিজেলের দোকান মালিক হেকমত আলী (৬৫)। তিনি ওই এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে। নিজ ঘরের সাথেই দোকানে তেল ডিজেল বিক্রি করতেন। রাতভর সোমেশ্বরী নদীতে চলা ড্রেজার মেশিনে এসব তেল ডিজেল বিক্রি হতো। কিন্তু রাতে এ ঘটনা ঘটার খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মীর মাহবুবুর রহমান সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন সোমবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুর্গাপুর থানার সার্কেল মাহমুদা শারমিন নেলী জানান, সুরতহাল রিপোর্টে লাশেরে মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Share this post

scroll to top