জায়েদ খানের বিরুদ্ধে হিন্দু বাড়ি দখলের গুরুতর অভিযোগ

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে এবার বাড়ি ও ক্লিনিক দখলের অভিযোগ উঠেছে।

সিনেমার শুটিংয়ের কথা বলে হিন্দু পরিবারের বাড়ি ও ক্লিনিক দখল করেছেন জায়েদ খান, এমন অভিযোগ করেছেন পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গীতা রানী মজুমদার।

জায়েদ খানকে ভূমিদস্যু উল্লেখ করে গীতা রানী ও তার মেয়ে অনন্যার অভিযোগ, সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে যাবতীয় অর্থ সম্পদ লুটপাট করেন। বর্তমানে তারা পিরোজপুরের সেই বাড়িতে উঠতে না পেরে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ জানান গীতা রানী মজুমদার।

মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে গীতা রানী বলেন, ‘আমার স্বামী ডা. বিজয় কৃষ্ণ হাওলাদার পিরোজপুর জেলা সদরের মাছিমপুর বাইপাস সড়কের পাশে ডায়াগন‌স্টিক সেন্টার আছে। স্বামী সারা জীবনের উপার্জিত অর্থ ও পরিশ্রমে ৪০ শয্যা বিশিষ্ট সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ‌্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পরিচালনা করে আসছেন। ২০১৬ সালের ২১ মার্চে গভীর রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওবায়দুল হক পিন্টু, জহিরুল হক মনু ওরফে জায়েদ খান এবং শহীদুল হক মিন্টু আমাদের ভবনে আসেন। ৫ম তলায় আমরা যেখানে থাকি সেখানে ‌’অন্তরজ্বালা’ সিনেমা শুটিংয়ের কথা বলে জায়েদ খান ও তার ভাইয়েরা আমাদের বিভিন্ন কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে। সেখানে আমাদের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে যাবতীয় অর্থ সম্পদ লুটপাট করে। অন্যদিকে আমাদের সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ‌্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার জোর করে দখল করে। আমার স্বামীকে আমাদের ক্লিনিকের অ‌্যাম্বুলেন্সে তুলে গুমের উদ্দেশ্যে ঝাটকাঠী গ্রামের এক পুরাতন ভবনে আটক রাখে। পরে তাকে ঝিনাইদহ জেলায় রেললাইনে নির্যাতন করে ফেলে দিয়ে আসে।’

এই ঘটনার চারদিন পর (২৬ মার্চ) পিরোজপুর সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন গীতা রানী। যার নাম্বার ২২/৭২।

গীতা রানী বলেন, ‘এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে জায়েদ খান গং আমাকে ও আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে পিস্তল দেখিয়ে ভারতে চলে যেতে হুমকি দেয়। না গেলে আমাদের খুন করা হবে বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ লাইন কেটে দেয়।’

গীতা রানী মজুমদার আরও বলেন, এসব ঘটনায় ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী ও আইজিপি বরাবর বিচার চেয়ে আবেদন করি। বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আসলে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হলে স্বপ্রণোদিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। আমরা এসময় ঢাকায় অবস্থান করি। ঢাকা থেকে পিরোজপুর বাসায় ফিরে দেখি আমাদের ঘর-বাড়ি ভাংচুর করে জায়েদ খান গং সবকিছু ডাকাতি করে নিয়ে গে‌ছে। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ৬ জুন পিরোজপুর সদর থানায় আরেকটা মামলা দায়ের করি, যার নাম্বার ১৮৫/০৮।

গীতা রানী মজুমদারের মেয়ে অন্যান্য হাওলদার বলেন, ‘উনি (জায়েদ খান) এখনও আমাদের বিরক্ত করছেন। কোন আত্মীয় স্বজনকে আমাদের বাড়িতে আসতে দেন না। খারাপ আচরণ করে। তাই আজকে প্রতিকার চেয়ে এই মানববন্ধন।’

Share this post

scroll to top