জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের চার নির্দেশনা আপিল বিভাগে স্থগিত

bangladesh high court‘উচ্চ আদালতে জামিনপ্রাপ্ত হওয়ার পর তার অপব্যবহার না করলে অধস্তন আদালত সেই জামিন বাতিল করতে পারবেন না’ উল্লেখ করে হাইকোর্টের দেয়া চার দফা নির্দেশনা সংক্রান্ত রায় স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এছাড়া আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয় আদেশে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মামলার আসামির জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

এর আগে চট্টগ্রামের মো. ইব্রাহিম নামের এক ব্যক্তির জামিন বিষয়ে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর চার দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের রায়ে এ চার দফা নির্দেশনা দেন।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে
১. হাইকোর্ট বিভাগ থেকে কোনো আসামি যদি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামিনে মুক্তি পান, তবে জামিনের অপব্যবহারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া অধস্তন আদালত তার জামিন বাতিল করতে পারবেন না।
২. নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামিনে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তির জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ দাখিল না করার কারণে অধস্তন আদালত তার জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠাতে পারবেন না।
৩. সংশ্লিষ্ট আসামি বা ব্যক্তির জামিন বাতিল করতে হলে হাইকোর্টের যে রুল বা আপিলে জামিন পেয়েছেন, সেই রুল বা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
৪. হাইকোর্ট যে রুলে বা আপিলে জামিন দিয়েছেন, তা খারিজ না হওয়া পর্যন্ত অধস্তন আদালত তার জামিন বাতিল করতে পারবেন না। হাইকোর্টের দেয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করলেই শুধু জামিন বাতিল করা যাবে।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে হাইকোর্ট থেকে জামিনের পর নিয়মিত সংশ্লিষ্ট আদালতে (অধস্তন আদালত) হাজিরা দিচ্ছেন, এমন আসামির জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। জামিনের অপব্যবহার না করলেও শুধু জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর হাইকোর্টের আদেশের কপি দাখিল না করার কারণে এই জামিন বাতিল করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অধস্তন আদালত থেকে প্রায়ই এমনটি করা হচ্ছে। দিনের পর দিন এ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফলে হাইকোর্ট ও বিচারপ্রার্থীরা আর্থিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উপরোক্ত নির্দেশনা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। সেটি শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তা স্থগিত করেন।

Share this post

scroll to top