জামালপুরে আরো ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত

নমুনা পরীক্ষা শেষে জামালপুরে আরো তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একজন জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার ও দুইজন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ওই বাবুর্চির বসবাসরত কর্মচারী কলোনি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও লকডাউন ঘোষণা হয়েছে দেওয়ানগঞ্জ দু’টি এলাকা। এ নিয়ে জামালপুরে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ জন। শনিবার (১১ এপ্রিল) রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৩৮ বছরের যুবক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরভবসুরী এলাকার একজন ৩৯ বছরের নারী। অন্যজন দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার ৪০ বছরের নারী।

জানা গেছে, বকশীগঞ্জে আক্রান্ত ওই বাবুর্চির বাড়ি জামালপুর জেলার নাকাটি এলাকায়। তিনি বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী কলোনিতে থাকেন। তার সাথে একই রুমে থাকেন আরো দু’জন। একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ড্রাইভার ও আরেকজন স্টোরকিপার। এর আগে করোনায় আক্রান্ত বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫৬ বছর বয়সী সিনিয়র স্টাফ নার্সটি থাকতেন এই কলোনি থেকে ২৫ ফিট দূরে নার্স কলোনিতে।

অপরদিকে, দেওয়ানগঞ্জের দুই নারীর মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জের এক গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তিনি নিজ বাড়িতে এসেছেন। বাড়িতে আসার পর তিনি সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হন। গত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকার আরেকজন নারীরও নমুনা নেওয়া হয় ওইদিন। ওই নারীর সর্দিজ্বর কিংবা শ্বাসকষ্ট নেই। ছয়দিন আগে তার ছেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে ফেরেন।  ছেলেটি জেলা পরিষদ মডেল গার্মেন্টসে কাজ করেন। বাড়িতে ফেরার ৪ ঘন্টা পর ওই ছেলেটি তার শ্বশুরবাড়ি চলে গেছেন বলে  ছেলেটির বাবা জানিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তার এসে ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করেন। শ্বশুরবাড়িতে চলে যাওয়ায় ওই ছেলেটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।

এব্যা পারে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার প্রতাপ নন্দী জানান, বাবুর্চির শরীরে করোনার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। চলাফেরা কথাবর্তায় তিনি দিব্যি সুস্থ মানুষ। সর্দিজ্বর নেই। তবু নমুনা পরীক্ষায় তার কোভিক-১৯ পজেটিভ পাওয়া গেছে। তাকে জামালপুরে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছে। ওই বাবুর্চি যে কলোনিতে থাকেন,  সে কলোনিটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কলোনির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, ওই দুই নারী যে দু’টি এলাকায় থাকেন সে এলাকা দু’টি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এলাকা দু’টির প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সারা জেলা থেকে ২৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবারে (৯ এপ্রিল) যেসব নমুনা পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে পরীক্ষায় তিন জনের  কোভিক-১৯ পজেটিভ ফলাফল এসেছে।

উল্লেখ্য, জামালপুরে সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় দুই জন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় দুই জন, মেলান্দহ উপজেলায় দুই জন ও মাদারগঞ্জ উপজেলায় এক জন। সকলকে নির্মাণাধীন জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Share this post

scroll to top