ছুটির ফাদেঁ দুরন্ত হয়ে উঠেছে দূর্গাপুরের স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা

আমরা খেলাধুলা করতেই গাড়িতে উঠে বসেছি।  এই গাড়িগুলো ক্ষেত থেকে বিভিন্ন রকম ফসল নিয়ে বাজারে যায়। তাই আমরাও এই গুলার করে বাজারে যাওয়ার জন্যই গাড়ির উপরে উঠে বসচ্ছি। নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কৃষিপণ্যবাহী একটি গাড়ির উপর বসে থাকা ১৫/১৬ জন গ্রামের ছেলেমেয়েদের বক্তব্য এটি !

মরণব্যাধি কোভিউ ১৯ ভাইরাসের প্রভাবে লকডাউন সারাদেশ। লম্বা ছুটির ফাঁদে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সকল প্রকার সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও। সেই সাথে সারাদেশের যাত্রীবাহী বাস সহ গণপরিবহনকারীর সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ। শুধুমাত্র পণ্য পরিবহনের জন্য খোলা রাখা হয়েছে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান যানবাহনগুলো ।

নেত্রকোনার দুর্গাপুরেও সরকারি নির্দেশনা মেনে বন্ধ রয়েছে দুর্গাপুর বাজারসহ উপজেলার সকল প্রকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। বন্ধ বাস সহ গণপরিবহনকারী যানগুলোও । তবে কৃষি কাজে ব্যবহার আর ফসল আনা-নেয়ার জন্য সড়কে চলাচল করছে ছোট-বড় নানা রকম যানবাহন।

শনিবার দুপুরে উপজেলার কৃষ্ণেরচর বাজারে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। তবে এই যানবাহনের ফাঁকে নজর আটকে যায় কিছু যানবাহনের দিকে। সড়কে কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত লড়ি গাড়িতে মিষ্টি কুমড়া আর চাল কুমড়া পরিবহন করতে চিত্র। তবে কৃষি পণ্য উপরে আশ্বাস এন্টানপ্রাইজ সহ বিভিন্ন লড়ি গাড়িতে দেখা মেলে ১৫/১৬ জনের গ্রামের বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েদের। শুধু মাত্র খেলার ছলেই জীবনকে ঝুকি মুখে রেখে ফিটনেসবিহীন এই সব অবৈধ লড়ি গাড়ি উপর চরে বসেছে ছেলেমেয়েরা।

এই সবগাড়ি নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যার ফলে হরহামেশাই সড়কে ঘটচ্ছে দুর্ঘটনাও। গেলো ২৯ ফেব্রুয়ারী রাতে উপজেলার শান্তিপুরে পিকনিক যাত্রীবাহী পিকআপের সাথে বালুবাহী লড়ি গাড়ির সংঘর্ষে প্রাণহারায় ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সদ্য এসএসসি পরিক্ষা শেষ করা চার শিক্ষার্থী।

লকডাউন থাকায় পৌর শহরে তেমন একটা লোকজন বাহিরে বের হচ্ছে না। গ্রামের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন এখনো গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ মানচ্ছেনা লকডাউন। লকডাউন অপেক্ষা করেই গ্রামের চায়ের দোকান গুলোতে চলছে রমরমা আড্ডা। গ্রামের বড়দের অসচেতনার প্রভাব পড়েছে ছোটদের উপরও। এর ফলেই যত্রতত্র ঘুরাঘুরি করে গ্রামের স্কুর পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা। তবে গ্রামের মানুষদের সচেতন করতে কাজ করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম সহ পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

আর দেশেই এই দুঃসময়ে গ্রামের মানুষদের আরো সচেতন হতে হবে বলে মনে সুশীল সমাজের নাগরিকরা। তাদের মতে, সড়ক নিরাপদ রাখতে গাড়ি চালক ও জনগণ দুইজনকেই সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে করোনা ভাইসারের কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন বন্ধ তখন গ্রামের স্কুল পড়–য়ারা আরো বেশি দুরন্ত হয়ে উঠেছে। তাই পরিবারের মা-বাবাদের তাদের সন্তানরা কি করছে বা কোথায় যাচ্ছে তা সব সময় নজরে রাখতে হবে ।

লরি মালিক স্বপন মিয়া জানায়, ঘটনাটি শোনার পরে আমি গাড়ির সামনে গিয়ে গাড়ির উপর থেকে বাচ্চাদের নামিয়ে দেই। এইসব বাচ্চারাই জোর করে গাড়ির উপর চেপে বসে আমরা বারবার না করল তারা আমাদের কথা শোনে না । গাড়ি যখন চলতে শুরু করে তখন পিছন দিয়ে তারা গাড়ির উপরে উঠে বসে। আমরা বেশ কয়েকবার গাড়ি থামিয়ে তাদেরকে নামিয়ে দিলেও পুনরায় পিছন দিয়ে গাড়ির উপরে উঠে বসে থাকে।

উপজেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, মালবাহী কোন গাড়িতে যেতে যাত্রী পরিবহন না করে তার জন্য আমরা সকল প্রকার গাড়িমালিকদের নির্দেশনা দিয়েছি । পণ্যবাহী গাড়ির উপর এলাকার ছেলেমেয়েরা যাতে না উঠে পারে তারা জন্যও ডাইভারদের আমরা নির্দেশন দিয়েচ্ছি এবং আমরাও সড়কে সবসময় দৃষ্টি রাখচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম জানায়, সারাদেশে করোনা ভাইরাস এর এক ধরনের আতঙ্ক চলছে । এ আতঙ্ক প্রতিরোধে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের পাশে থাকার এবং মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করা । পাশাপাশি মানুষদের সতেচন করছি যাতে তারা সরকারী নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকে। তবে স্কুল কলেজ গুলো বন্ধ থাকায় গ্রামের বাচ্চারা আরো দুরন্ত হয়ে উঠেছে। গার্জিয়ানদের অসতর্কতার কারণেই বাচ্চারা এভাবেই গাড়ির উপর উঠে বসেছে। আমরা ইতিমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছি। তাতে তারা গার্জিয়ানদের এ ব্যাপারে সচেতন করেন ।

Share this post

scroll to top