ছাত্রদল নেতার আবেগঘন স্ট্যাটাস

যে বয়সে এসে ক্লাসের বন্ধুরা বউয়ের লাজুক চাহনি দেখে আপ্লুত হয়, ছোট ভাইয়েরা নিজেদের সোনালী ভবিষ্যৎ গড়তে দিশেহারা, অথবা যে বয়সে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক হিসেবে আত্মসমর্পণ করার প্রস্তুতি নেওয়া বয়স্ক পিতা – মাতার সাবালক ছেলের মতো সংসারের দায়িত্ব তুলে দিয়ে তাঁদের ভার মুক্ত করার কথা ছিলো, সে বয়স অনেক আগে পেরিয়ে গেলেও আমার মতো শত শত আতিক শহীদ জিয়ার প্রেমে ও ছাত্রদলের রাজনীতির নেশায় মাতাল।

বাবা নামক মানুষটির শরীরের ঘামের বিনিময়ে উপার্জিত টাকায় ছাত্রদলের রাজনীতি করার অপরাধে নিজেকে বড় বেশী অপরাধী মনে হয়। দুঃখিনী মায়ের দরদ ভরা মুখ মনে পড়লেই বুকের ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠে। অভিমানী ছোট বোনটির একমাত্র অভিযোগ, ” ভাইয়া, তোর জন্য আর কতো কষ্ট করবো আমরা,অনেক হয়েছে। এইবার জীবন নিয়ে সিরিয়াস হ।”

কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারি না। অশ্রু সজল নয়নে অভিমানী বোনের দিকে তাকিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, ” এরকম অনিশ্চিত জীবনের কথা জেনেও আমার মতো হাজার হাজার তরুণ ঝাঁকে ঝাঁকে রাজপথে নামছে। শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে,বাবা – মায়ের কথা না শুনে মিছিলে যাচ্ছে, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে শহীদ জিয়ার নামের জিকির ধ্বনির ছন্দায়িত কম্পনে রাজপথ মুখরিত করে তুলছে। জেল – জুলুম – হুলিয়া মাথায় নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আহত কিংবা নিহত হচ্ছে।”

যারা একসময় আমার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছে , তারা আজ অনেকেই বি সি এস ক্যাডার, অথবা খুব স্মার্ট বেতনের চাকুরীজীবি।
অথচ নিজের মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে, মায়ের মতো নেত্রীর আহবানে আন্দোলন করতে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বছরের পর বছর হলের বাইরে । মায়ের অনেক সাধের কানের দুল জোড়া বিক্রি করে বাসা ভাড়া দিতে হয়েছে।
আন্দোলনের সময় পুলিশ যখন গভীর রাতে বাসায় গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে তুলে বাবাকে জিজ্ঞেস করে, ” আপনার ছেলে কই। কিসের ছাত্রদল করে, ওরে পাইলে খবর আছে।” তখন বাবার অসহায় মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, ” বাবা তোমার শরীর ছুঁয়ে শপথ করলাম, আর না।”
কিন্তু পারি না। মনের কথা, মুখে এসে আটকে যায়। যখন দেখি আমার মায়ের মতো নেত্রী জেলখানায় বন্দী, তখন আমার মতো আতিক কে আটকিয়ে রাখার সাধ্য কার।
আগামীর দেশনায়ক ও আমার প্রিয় নেতার সন্তান তারেক জিয়ার কাছে একটাই অনুরোধ — আমরা ক্ষমতা চাই না। আমরা রাজনীতি করতে চাই, রাজপথে মিছিল করতে চাই। আমাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিবেন,আর একবার প্রকম্পিত রাজপথে ঘামে ভেজা শার্টের বোতাম খুলে বলতে চাই….

আমরা সবাই জিয়ার সেনা
ভয় করিনা বুলেট বোমা।

আমার নেত্রী আমার মা
বন্দী থাকতে দিব না।

কৃষিবিদ মোঃ আতিকুর রহমান এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top