ঘূর্ণিঝড় ফণী : খুলনায় আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে খুলনার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেলেও আজ শুক্রবার সকালে ঝকঝকে রোদ উঠেছে। অন্যদিকে ভ্যাপসা গরম কেটে দক্ষিণা বাতাস ক্রমে জোরালো হচ্ছে। ভোরে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক থাকলেও সম্ভাব্য দুর্যোগ এড়াতে উপকূলের মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাফর রানা আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টায় জানান, এখনো কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। হালকা রোদ আছে। তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে ১২৬ সদস্যের সাতটি টিম অল্প সময়ের মধ্যেই কাজে নেমে পড়বে। মানুষকে নিরাপদ স্থনে নিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে আকাশে কালো মেঘের ঘণঘটা থাকায় কয়রা উপজেলার জনসাধারণ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর কয়রার সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে এবং উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জনসাধারণ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে শুরু করে। কিন্তু আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়রায় মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। কারণ অমাবশ্যার গোন হওয়ায় নদীতে দেড় থেকে দুই ফুট পানি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় আইলার আগ মুহূর্তে যেমন তীব্র গরম অনুভব হয়েছিল, তেমনি মনে হচ্ছে। তারা বাঁেধ ভাঙন ও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।

অপরদিকে, খুলনার দাকোপ উপজেলার মানুষ জানে একটা ঝড় আসছে, তবে কেমন বড় বা কি হতে পারে তা নিয়ে খুব মাথাব্যথা নেই তাদের। অনেকে বলছেন, পরিস্থিতি বুঝে চিন্তা করবেন। আবার কেউ বলেছেন, ঝড় আসলে কি করার আছে। মাঝে মাঝেই তো আসে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার বলেন, ঘূূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে জেলার ৩২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় ১হাজার ৯৫ জন ও দাকোপ উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ২ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং নয়টি উপজেলায় নয়টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৪টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় খুলনার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাতাসের আদ্রতা শতকরা ৭০শতাংশ। তিনি জানান, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে খুলনায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top