ঘুষ লেনদেনের মামলায় ডিআইজি মিজানের হাইকোর্টে জামিন

ঘুষ লেনদেনের মামলায় তিন বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পুলিশের বরখাস্তকৃত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে ২ মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার আবেদনের শুনানি করে বুধবার বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় এখনো জামিন না পাওয়ায় তার কারামুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। তার আপিল গত ৬ এপ্রিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ওই আপিলের সাথে করা জামিন আবেদনের ওপর বুধবার শুনানি নিয়ে তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ মামলার রায় দেন। রায়ে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও এ মামলার প্রধান আসামি খন্দকার এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু অর্থ পাচারের অভিযোগ থেকে মিজানুর রহমানকে খালাস দেয়া হয়। পরে গত ১০ এপ্রিল অর্থ পাচারের অভিযোগে তার সাজা চেয়ে হাইকোর্টে দুদক আপিল করে। এছাড়া গত ৬ এপ্রিল এনামুল বাছিরও তার দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন যা শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।

২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো: ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেফতার করা হয়। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত রায় দেন।

Share this post

scroll to top