গৌরীপুরে জমি জবর দখলের অভিযোগে দু’পরিবারের দ্বন্দ্ব চরমে : পাল্টাপাল্টি মামলা

জবর-দখলময়মনসিংহের গৌরীপুরে জমি জবর দখলের অভিযোগে দুই প্রতিবেশী দ্বন্দ্ব এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এঘটনায় জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি
মামলা চলছে । এদিকে গ্রামের নিরিহ প্রকৃতির লোক জমির মালিক বোকাইনগর ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামের মৃত রহিম বক্স এর ছেলে মো: আব্দুল মালেকের পরিবারের উপর চলছে অব্যাহত হামলা ও হুমকি ধামকি। গত ১৫ জুলাই প্রতিপক্ষের লোকজন আ: মালেকের ছেলে মো: এমদাদুল হক (১৮) এর উপর হামলা করেন। এতে এমদাদুল হক আহত হন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ মাসুম আলম গংদের বিরুদ্ধে গৌরীপুর থানায় আরো একটি মামলা হয়েছে। এছাড়াও মো: আব্দুল মালেকের জমি বেদখল দেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী মাসুদ আলম গংদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শাখের হোসেন সিদ্দিকীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, বোকাইনগর ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামের মৃত রহিম বক্স এর ছেলে মো: আব্দুল মালেক প্রতিবেশী মৃত আ: রহিম খান পাঠান এর নিকট হতে ১৯৯২ সালের ২৯ নভেম্বর ৯২৯২ নম্বর সাফ কাওলা দলিল মূলে বিক্রয়কৃত জমি সরেজমিনে দখল বুঝিয়ে দেন। সেই সময় হতে অদ্যবধি পর্যন্ত আ: মালেক উক্ত জমি ভোগ দখল করি আসছেন।

সম্প্রতি জমি বিক্রেতা মৃত আ: রহিম খান পাঠান এর ছেলেরা (মাসুম আলম গংরা) ওই জমি নিজেদের দাবি করে বেদখল দেন এবং ওই জমিতে একটি দোকান ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। পরে আ: মালেক ঈশ্বরগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিষেজ্ঞার দাবীতে ২৪/১৯ নম্বর অন্যপ্রকার একটি মোকদ্দমা দায়ের করেন। যা এখনবিচারাধীন আছে। উক্ত মামলাটি দায়ের পর থেকে তাদের পরিবারের উপর হুমকি অব্যাহত আছে। এদিকে আ: মালেক গংদের বিরুদ্ধেও প্রতিপক্ষ মামলা দায়ের
করেছেন। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান থাকায় স্থানীয় মাতাব্বরগণ দু’পক্ষের মধ্যে ৯২৯২ নম্বর বন্টননামা দলিলের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করে দেন। বন্টন নামায় প্রদত্ত জমিতে আ: মালেকের লিচু, বাশ ও কাঠাল বাগান, একটি দোকান ঘর সহ পারিবারিক গোরস্থান রয়েছে। এদিকে আ: মালেক উক্ত বন্টননামা দলিলে নিজের প্রাপ্যতা বুঝিয়ে না পাওয়ায় সিভিল আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই প্রতিপক্ষ মাসুম আলম গংরা আ: মালেকের লিচু, কাঠাল ও বাশ বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে এবং দোকানে থাকা একটি ৩২ ইঞ্চি রঙ্গিন এলএডি টিভি নিয়ে যায় ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দোকানে তালা লাগিয়ে জবর দখল করে নেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ করে কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে তিনি পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেন।

আ: মালেক বলেন, আমার প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষমতাবান থাকায় আমি সুবিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই এবার আমি সঠিক বিচারের আশায় পুলিশ সুপারের স্বরনাপন্ন হলাম।

স্থানীয় রফিক উদ্দিন খান পাঠান ও মো: আমজাদ হোসেন লিটন জানান, ওই দুই পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান থাকায় একটি বন্টননামা
দলিলের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়্। বন্টন নামায় উল্লেখিত জমি আ: মালেকের নামে নাম খারিজ করা। দীর্ঘদিন পর আ: মালেক বুঝতে পারেন যে, তিনি বন্টননামা দলিলে সঠিক হিস্যা পান নাই। তখন তিনি নিজের প্রাপ্ততার জন্যে সিভিল আদালতে মামলা দায়েরের পর থেকেই শুরু হয় দু’পরিবারের দ্বন্দ্ব। যা বর্তমানে জমি জবর দখল, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। প্রতিপক্ষের একজন গড়পাড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমান জানান, আ: মালেক একজন মামলাবাজ। তার সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন। এখানে তার কোন জমি নাই। অন্যের জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগটি তদন্তাধিন। তদন্ত শেষে দোষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত
ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Share this post

scroll to top