গরিলা গ্লাস কি? সাধারণ কাচের সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়?

সাধারণ অ্যালুমিনোসিলিকেট আপনার স্মার্টফোনের স্ক্রীন প্রটেক্টর হিসেবে সহজেই কাজে লাগাতে পারেন, কিন্তু তা কখনওই গরিলা গ্লাসের মতো শক্তিশালী, স্ক্র্যাচ প্রুফ আর নমনীয় হবে না।

ইদানীং স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদি প্রায় সবেতেই গরিলা গ্লাস ব্যবহার করা হয়। এ কথা আমরা অনেকেই জানি যে, টাচ সেন্সর যুক্ত আধুনিক স্মার্ট ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সুরক্ষার স্বার্থে এই গরিলা গ্লাস ব্যবহার করা হয়। কিন্তু জানেন গরিলা গ্লাস কি বা অন্যান্য সাধারণ কাচের সঙ্গে এর ফারাক কোথায়? আসুন জেনে নেওয়া যাক।

গরিলা গ্লাস একটি বিশেষ ধরনের কাচ যা করনিং আইএনসি (Corning Inc) কোম্পানির তৈরি। এটি বিশেষ করে স্মার্ট ডিভাইজ যেমন,- ল্যাপটপ, মনিটর, স্মার্টফোন, টিভি ইত্যাদির স্ক্রীন প্রটেক্ট বা সুরক্ষিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

১৯৫২ সালের দিকে, করনিং সংস্থার এক বিজ্ঞানী এক বিশেষ ধরনের কাচ তৈরি করেন যা সে যুগের সবচেয়ে শক্তিশালী কাচ ছিল। এটি অ্যালুমিনিয়াম থেকে অনেক পাতলা, সাধারণ কাচে তুলনায় অনেক শক্ত এবং ষ্টীলের মতোই কঠিন ছিল। এ হল গরিলা গ্লাসের জন্মের কথা। বর্তমানের গরিলা গ্লাস কিন্তু অনেকটাই আলাদা। এতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে আর এটি আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।

২০০৮ সালে ফার্স্ট জেনারেশন করনিং গরিলা গ্লাস তৈরি করা হয় এবং পরে ২০১২, ২০১৩, এবং ২০১৪ সালে এর মধ্যে প্রযুক্তিগত অনেক উন্নতিসাধন করা হয়। ২০১৬ সালের জুলাই মাস নাগাদ দিকে এই গরিলা গ্লাসের ফিপ্ত (৫ম) জেনারেশন বাজারে আসে।

গরিলা গ্লাস কী ভাবে কাজ করে?

করনিং সংস্থা যে নতুন ধরনের কাচ তৈরি করেছে, তার আসল নাম ‘অ্যালুমিনোসিলিকেট’ (Aluminosilicate) — সাধারণ যে কোনও কাচের মতো এটিও তৈরি করা হয় মূল উপাদান বালি বা স্যান্ড থেকে। তাছাড়া এই গ্লাসে ব্যবহার করা হয় অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, এবং অক্সিজেন। গ্লাসটির প্রয়োজনীয় মডেল তৈরি করে নেওয়ার পরে একে ৪০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রার গলিত লবণ মিশ্রণের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলেই গরিলা গ্লাস অন্যান্য কাচের তুলনায় আরও শক্তিশালী এবং নমনীয় হয়ে ওঠে।

সাধারণ অ্যালুমিনোসিলিকেট আপনার স্মার্টফোনের স্ক্রীন প্রটেক্টর হিসেবে সহজেই কাজে লাগাতে পারেন, কিন্তু তা কখনওই গরিলা গ্লাসের মতো শক্তিশালী, স্ক্র্যাচ প্রুফ আর নমনীয় হবে না। গরিলা গ্লাসের প্রস্তুতকারী সংস্থা করনিং-এর দাবি, এই গরিলা গ্লাস রিসাইকেলেবল এবং এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক নয়। তাই ইদানীং স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদির টাচ স্ক্রিনকে বিভিন্ন ছোটখাট আঘাত, দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে গরিলা গ্লাস ব্যবহারের চল অনেকটাই বেড়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top