গণতন্ত্রের বদলে দেশে ‘হরণতন্ত্র’ চালু করেছে সরকার : রিজভী

দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসন দিয়ে সরকার এখন ‘হরণতন্ত্র’ চালু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহিলা দলের এক অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে কার্যালয়ের সামনে থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় পর্যন্ত মিছিল বের করে মহিলা দল। এসময় নেতা-কর্মীদের হাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেত্রী হেলেন জেরিন খান, পেয়ারা মোস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, সাবিনা ইয়াসমীন, মাসুদা খানম লতা, নিলুফার ইয়াসমীন নিলু, সেলিনা হাফিজ, মর্জিনা আফসারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অন্যায়-অত্যাচারে বিরুদ্ধে সত্যের জন্যে এই ইট-পাথর-কংক্রিটের রাজপথের মিছিল চলবে, আন্দোলন চলবে, যাত্রাবাড়ি থেকে গাবতলী আর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া মিছিল থামবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মুক্তি হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হন।

তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছেন। তাতে আপনার সাময়িক লাভ। কিন্তু আপনার মনে কী শান্তি আছে? অবৈধভাবে, অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকলে কখনো মনে কখনোই শান্তি থাকে না। সব সময়ে পতনের আশংকায় আপনার দুশ্চিন্তা সব সময় থাকবে। নেলসন মেন্ডেলাকে ২৭ বছর কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিলো। সে দেশের শ্বেতাঙ্গ সরকার আটকিয়ে রেখেছিলো। তাতে জনগণ কার দিকে ছিলো? বিশ্বজনমত কার দিকে ছিলো? শ্বেতাঙ্গরা সেদিন বাঁচতে পারেনি। গোটা বিশ্বে নন্দিত-জননন্দিত নেতা নেলসন মেন্ডেলা। আপনি বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছেন, বন্দি রেখেছেন। তিনি আর বাংলাদেশের নেতা নন, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অন্যায়-প্রতিহিংসা-জিঘাংসার শিকার। তার চিকিৎসাও করতে দিচ্ছেন না।’

রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রী সুস্থ মানুষ কারাগারে হেঁটে গেলেন। এখন তিনি হাঁটতে পারছেন না, হুইল চেয়ার ব্যবহার করছেন। তিনি মাথা সোজা করতে পারছেন না। জেলখানার একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠের মধ্যে রেখেছেন তাকে। সেখান থেকে টেনে হিঁচড়ে কদিন পর পর তাকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেনো? এই টানা-হেঁচড়া করে কি দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন?’

এ সময় সারাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনে রোধে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা আমাদের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারবো ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলছে এবং চলবে। আমরা শুধু বলতে চাই, জাগো নারী জাগো বন্দি শিখায় …. এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top