কেশবপুরে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগী, একদিনে আক্রান্ত আরো ৯ জন

যশোরের কেশবপুর উপজেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে ৪ রোগী মারা গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৪১০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে শহরের দুই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে সহস্রাধিক এডিস মশার লার্ভা উদ্ধার করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলায় আরো ৯ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয় এবং বর্তমানে ২৯ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হারুন-অর-রশীদ সাংবাদিকদের জানান।

জানা যায়, কেশবপুর শহরের ব্যবসায়ী কনক কুমার সেন ও নাসির আহমেদ গাজীর বাড়ির টায়ারের মধ্য থেকে এডিস মশার প্রায় এক হাজার লার্ভা উদ্ধার করা হয়। গত ১৪ অক্টোবর কেশবপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুশান্ত দত্ত ওই দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুরনো টায়ারের মধ্যে জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশার লার্ভা সনাক্ত করে ধ্বংস করেন। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত শিশু ও নারী পুরুষসহ ৪১০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তার সংকটের কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তসহ অন্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তারা হলেন- উপজেলা শহরের স্বর্ণপট্টিতে বসবাসকারী আনন্দ ঘোষের স্ত্রী সাগরিকা ঘোষ, মোবাইল গার্ডেনের ম্যানেজার সজল সিংহ, বরণডালী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস ও বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জামির মোড়লের মেয়ে লাভলী খাতুন।

তাছাড়া স্বর্ণপট্টির ব্যবসায়ী উজ্জ্বল সেন, আবু সাঈদ, কুন্তল বিশ্বাস, গোপাল কুন্ড, টুকু ঘোষসহ অনেকেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কেশবপুরের অনেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক, যশোর, খুলনা ও ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুশান্ত দত্ত জানান, সোমবার শহরের স্বর্ণপট্টির কনক সেন ও নাসির গাজীর বাড়িতে পুরনো টায়ারের মধ্য থেকে ডেঙ্গু মশার লার্ভা উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হারুন-অর-রশীদ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ৪ শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এর মধ্যে শতাধিক রোগী থাকে জ্বরে আক্রান্ত। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। জ্বরে আক্রান্ত কোনো রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে প্রথমে তার রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এদিকে যশোর জেলার মধ্যে কেশবপুর উপজেলা এখন সবচেয়ে ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকা বলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ রায় নিশ্চিত করেছেন।

Share this post

scroll to top