‘কেন যে বাবা বিয়ে দিল এই গ্রামে!’

কেন যে বাবায় বিয়ে দিল এই গ্রামে! আগে জানলে বিয়েই বইতাম (বসতাম) না। ভাই এই রাস্তার কথা আর কি কমু, ডেলিভারী রোগীর যে কি কষ্ট? মাইয়া মানুষ হয়ে এই গ্রামে বিয়ে বইলেই বুঝতে পারতেন। আমার যখন প্রসব বেদনা উঠছিল তখন এই কাঁদামাটি মাড়িয়েই হাসপাতালে যেতে হইছিল। কথাগুলো বলছিলেন সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরিয়া ইউনিয়নের বালাহার গ্রামের গৃহবধূ মোছা: সাথী বেগম।

বুধবার সকাল ১১টায় সোয়াইড় কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে মোছা: সাথী বেগম তার ৩মাসের শিশুকে নিয়ে কাঁদাপানি মাড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এই কথা কেবল গৃহবধূ সাথী বেগমের একার নয়, সোয়াইড়-বালাহার গ্রামে শত শত মহিলার কথা।

জানা যায়, উপজেলার সোয়াইড়-বালাহার গ্রামের দেড় কিলোমিটার অংশ কাঁচা। বর্ষা মৌসুমসহ বছরের অর্ধেক সময়ই থাকে কাঁদাপানি। এই কাদাপানি মাড়িয়ে প্রতিদিন অসুস্থ্য রোগী, শিক্ষার্থীসহ শত শত সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মেয়ে ও শিশু শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়ামনি ও সুমি খাতুন বলেন, কাদাপানির মধ্যে বই-খাতা পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার মাটি পিচ্ছিলের কারণে অনেক সময় আমরা স্কুলেই যেতে পারি না।

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী শাহেদ আলী বলেন, সোয়াইড়-বালাহার গ্রামটি খাজুরা ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রাম। এই গ্রাম থেকে সিংড়া শহর বা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে যেতে একটি মাত্র কাঁচা রাস্তা। প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষকে কাদাপানি ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি রাস্তাটি যেন চলাচলের উপযোগী করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ডালিম বলেন, কাঁদাপানির এই রাস্তাটিতে বিশেষ করে অসুস্থ্য রোগী ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিষদের সমন্বয় মিটিংয়ে রাস্তাটির বর্তমান অবস্থা উপস্থাপন করা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে মাটি কেটে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিল। পরে তা ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে পরিকল্পিতভাবে কাজ করা দরকার। কারণ রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, পরিকল্পনা না থাকলে রাস্তা কোন অবস্থাতেই টেকসই হবে না। আর এজন্য বিশেষ বরাদ্দ দরকার বলেও জানান তিনি।

Share this post

scroll to top