কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবারের মান ও দাম নিয়ে নৈরাজ্য

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত খাবারের রেস্তোরাগুলোতে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাকৃবি প্রশাসন। তবে নির্ধারিত মূল্যের তালিকা ক্যাম্পাসে অবস্থিত খাবারের রেস্তোরাগুলোতে ঝুলিয়ে দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে মূল্যতালিকাতে নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খাবার বিক্রির কথা থাকলেও সেটি মানছেন না বেশিরভাগ রেস্তোরা মালিক। খাবারের দাম এবং মান দুটোই অপরিবর্তিত রয়েছে। খাবারের দাম নিয়ে রেস্তোরা মালিকরা নাটক করছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র বিষয়ক বিভাগ দুপুরের দিকে বাকৃবি ক্যাম্পাসে অবস্থিত খাবারের রেস্তোরাগুলোতে অভিযান চালায়। পরে রেস্তোরা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খাবারের দাম নির্ধারণ করে একটি মূল্যতালিকা তৈরী করে । নির্ধারিত মূল্যতালিকাটি রেস্তোরা মালিকদের প্রদান করা হয় এবং সেটি রেস্তোরায় ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সরেজমিনে রেস্তোরাগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে অবস্থিত ৯টি খাবারের রেস্তোরাগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র ১টি রেস্তোরাতে (সজীব হোটেল) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যতালিকাটি ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়। অন্যদিকে ৮টি রেস্তোরাতেই খাবারের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। সেই সাথে রান্নাঘরের অস্বাস্থ্যকর ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এবং কর্মচারিদের নিধার্রিত পোশাক ও মাথা না ঢাকানোর বিষয়টিও লক্ষ করা যায়।

একাধিক হোটেল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্ধারিত মূল্যতালিকাটি আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই ঠিক করা হয়েছে। সে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তৈরীকৃত মূল্যতালিকাটির মধ্যে খাবারের নির্ধারিত দাম নিয়ে কিছুটা আপত্তি রয়েছে। কারণ আমরা ভালো খাবার শিক্ষার্থীদের পরিবেশন করি। তাই দাম বেশি রাখা হয়। তাছাড়া সবকিছুর বাজার মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আবারো বসে খাবারের মূল্য পুনরায় নির্ধারণ করতে চাই।

খাবারের দাম নিয়ে অভিযোগ করে ভেটেরিনারি অনুষদের ২য়বর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখারুল ইসলাম সৈকত বলেন, তিনবেলা খাবার খাইতে একজন শিক্ষার্থীর প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা লাগে। মাসে ৪৫০০ টাকা লাগে শুধু খাবার খেতে। যা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টসাধ্য। তার উপর দাম অনুযায়ী খাবারের মান ও পরিমাণ অনেক কম। অন্যদিকে রেস্তোরাগুলোতে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। পাশাপাশি করোনার মাঝে হোটেলগুলোতে এক প্লেট ও গ্লাস দিয়ে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। যার কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দিন বলেন, আমরা রেস্তেরাগুলো পর্যবেষক্ণ করে দেখেছি। পরে রেস্তোরা মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা মূল্যতালিকা নির্ধারন করে দিয়েছি এবং মূল্যতালিকাটি রেস্তোরায় ঝুলিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা পরবর্তীতে আবারো মনিটরিং করব এবং সেগুলো যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি না সে বিষয়টিও দেখবো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশানের পক্ষ থেকে খাবারে মূল্যতালিকার একটি বড় ব্যানার তৈরী করে প্রতিটি রেস্তোরায় ঝুলিয়ে দিবো। তারপরেও তারা সেগুলো না মানলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Food Value Chart.jpg (1)

Share this post

scroll to top