কিশোরগঞ্জে ভাইয়ের সাথে বিরোধে ২ বছরের ভাতিজাকে গলাকেটে হত্যা

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে আপন চাচাতো ভাইয়ের সাথে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওয়াসিম নামে দুই বছর বয়সী এক শিশুকে তার চাচা ও চাচার ছেলেরা মিলে গলাকেটে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কলমা ইউনিয়নের ডালারকান্দি গ্রাামে পৈশাচিক এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত শিশু ওয়াসিমের চাচাতো চাচা আব্দুর রাজ্জাক (৬৫) এবং তার চার পুত্র আলকাছ মিয়া (৩০), সাইফুল (২৫), কাউস (২৩) ও সৃজনকে (২০) আটক করেছে। এছাড়া হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বর্বর হত্যাকা-ের শিকার শিশু ওয়াসিম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের ডালারকান্দি গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ডালারকান্দি গ্রাামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার সাথে একই বাড়ির আপন চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিশুটিকে ঘরে একা পেয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও তার ছেলেরা গরু কাটার ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। ঘটনার সময় শিশুটির মা বাড়ির পিছনে টয়লেটে গিয়েছিলেন এবং শিশুটির বাবা আব্দুল ওয়াদুদ কাজের সন্ধানে কুলিয়ারচরে অবস্থান করছিলেন।

কিছুক্ষণ পর শিশুটির মা ঘরে ফিরে শিশু সন্তানের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।

এ সময় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক ও তার চার পুত্রসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্যে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।

অষ্টগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: শরীফুল ইসলাম জানান, বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হেেয়ছে।

এছাড়া এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফুল ইসলাম শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নয়া দিগন্তকে জানান।

এদিকে, জেলার ইটনা উপজেলায় ফুটবল খেলা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মেরাজ মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার এলংজুরী বাজারে এই নৃশংস হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।

নিহত মেরাজ মিয়া উপজেলার এলংজুরী ইউনিয়নের এলংজুরী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে। তিনি ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক (পিয়ন) পদে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে এলংজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: গোলাপ মিয়ার পক্ষের লোকজনের সাথে ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজ মিয়ার পক্ষের লোকজনের ঝগড়া হয়।

বিষয়টি মিটমাট করার জন্য গতকাল শুক্রবার সকালে উভয়পক্ষ এলংজুরী বাজারে সালিশ দরবারে বসে। এ সময় সিরাজ মিয়ার লোকজনের হাতে ইউপি চেয়ারম্যান মো: গোলাপ মিয়া লাঞ্ছিত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসন করে।

বিষয়টি ফয়সালা করার জন্য বিকালে পুলিশের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ সমঝোতা বৈঠকে বসে। সমঝোতা বৈঠকের এক পর্যায়ে বাজারে একটি দোকান থেকে মালামাল কিনতে যান ইউপি সদস্য সিরাজ মিয়ার বড় ভাই মেরাজ মিয়া।

এ সময় মেরাজ মিয়ার উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন চড়াও হয়। হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মেরাজ মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে চলে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মেরাজ মিয়াকে উদ্ধার করে দ্রুত কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মেরাজ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইটনা থানার ওসি মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বিপিএম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে হাসান আলীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Share this post

scroll to top