কলমাকান্দায় ২ দিনে ডায়রিয়ায় ২২ শিশু আক্রান্ত

ভাইরাল ডায়রিয়া রোটা ভাইরাস রোগ ছড়িয়ে পড়েছে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায়। শীতকালে শিশুদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী সংক্রামক ভাইরাস ‘রোটা’। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয় বেশি। আর দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা আরও বেশি ঝুঁকিতে থাকেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২২ জন শিশু ভাইরাল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এনিয়ে শিশুর সংখ্যা দাড়ালো ৫০ জন। তাদের মধ্যে ১৭ জন শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় (২ ডিসেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে , সম্প্রতি ৫০ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতাল চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে ১৭জন শিশু সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ৩৩ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কলমাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চত্রংপুর গ্রামের মো. শামীম আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ভাতিজা আব্দুল আহাদের ডায়রিয়া দেখা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার সকালে তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। স্যালাইন পুশ করা হয়েছে এবং তা শরীরে চলছে।

আরেক রোগীর অভিবাবক রংছাতি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মো. মিন্টু মিয়া জানান, ৮ মাস বয়সী শিশু আমার ছেলে মুজাহিদের বৃহস্পতিবার রাতে পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। পরে না কমায় আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তির পরামর্শ দেন। আমার ছেলেকে ভর্তি করেছি। ভর্তির পর কর্তব্যরত সেবক একটি ঔষধের স্লিপ হাতে ধরিয়ে বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য বাহির থেকে ঔষধপত্র কিনে আনতে হবে। পরে আমি কিনে এনে দেই।

এবিষয়ে কর্তব্যরত সেবিকা মনিসা কুবি ও চাঁপা দিও তারা বলেন, আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ঔষধপত্র আছে। এ গুলো স্যালাইনসহ রোগীদের মধ্যে সাপ্লাই দিচ্ছি। আর আন্তরিক ভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

জরুরী বিভাগে কর্মরত উপ-সহাকারি মেডিকেল অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি প্রতিদিন গড়ে ডায়রিয়া ১০/১২ জন রোগী আসেন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশী। এদের মধ্যে কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। তবে শিশু রোগীর সংখ্যা গত দুইদিনে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এবিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শরিফুল আলম বলেন, রোটা ভাইরাস রোগী সন্ধ্যার আগে এসেছিলেন তিনজন এর মধ্যে দুই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরেক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে নিয়ে গেছেন তার অভিভাবক।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আল মামুন বলেন, ভাইরাল ডায়রিয়া রোটা ভাইরাস রোগের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। আক্রান্ত রোগীদের সার্বক্ষণিক নজরে রাখা হচ্ছে। অনেক শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ আছে। রোগীদের মধ্যে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ দেয়া হচ্ছে।

Share this post

scroll to top