করোনা সংকটে কী করছে সুশীল সমাজ?

বর্তমান বিশ্বে এক ‘মহাসংকটের’ নাম করোনাভাইরাস।  এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত কয়েকমাসে সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও বিভিন্ন সংকট মোকাবিলা করছে।  এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সংকটে রয়েছেন দেশের খেটে খাওয়া মানুষ।

করোনা মহামারির মধ্যে গত ২০ মে (বুধবার) আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এতে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাণহানিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব সংকট মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।  ত্রাণ দিচ্ছে।  পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসছে অসহায় মানুষদের সাহায্য করতে।

তবে এসব সংকট মোকাবিলায় সুশীল সমাজের ভূমিকা কী?

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমরা কয়েকভাবে কাজ করছি।  আমাদের জাতীয় কমিটিসহ শিক্ষকদের মধ্য থেকে আলাদাভাবে সহযোগিতামূলক কাজে যুক্ত আছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা টিউশনি করে চলতেন তাদের জন্য সহযোগিতামূলক কার্যক্রম চলছে। অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে, একই সঙ্গে খাবার রান্না করেও বিতরণ চলছে।

সামাজিক কর্মী, নারীবাদী এবং পরিবেশবাদী খুশি কবির বলেন, আমরা বিভিন্ন অঞ্চলকে কেন্দ্র করে কাজ করছি।  যারা নিগৃহীত, বঞ্চিত, বাসায় আছেন তাদের সঙ্গে বসছি এবং কথা বলে সমস্যাগুলোর খোঁজখবর নিচ্ছি।  এছাড়া যেসব এলাকায় করোনার পাশাপাশি আম্ফানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাদের অর্থনৈতিক সাপোর্টসহ কাজের ক্ষেত্রে আমাদের কর্মীরা সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক’র (সুজন) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা করোনা সংকটের শুরু থেকেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।  সরকারের জাতীয় গভর্নেন্সের বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে আমরা কাজ করছি।  তাছাড়া আমরা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী নিয়ে একাধিক সেমিনার করেছি। এছাড়া আমরা হাঙ্গার প্রজেক্টের মাধ্যমে দুই কোটি ২১ লাখ টাকার সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আমাদের সহযোগিতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত না থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে চলছে। আমরা আমাদের মূল যে কাজ গবেষণা, সেটি অব্যাহত রেখেছি।  ইতোমধ্যে সরকারের কাজে যেসব অসঙ্গতি এসেছে আমরা সেগুলো নিয়েও কাজ করেছি। সরকার কিছু জায়গায় ব্যবস্থাও নিয়েছে।  এছাড়া সরকার করোনাকালীন সময়ের শুরু থেকে যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে তার পুরোটা নিয়ে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম চলছে।  আশা করছি খুব শিগগিরই সেগুলোর রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবো।

সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান’র (সুপ্র) মিডিয়া ম্যানেজার আব্দুল আলীম আল রাজী বলেন, আমাদের কর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় সহযোগিতা করছেন।  ইতোমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে করণীয় নির্ধারণে একাধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সভা-সেমিনার করেছি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা খাবার দিচ্ছি না। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের কাছে যারা লিগ্যাল সহযোগিতা নিয়েছে তাদের মধ্য থেকে তালিকা করা হয়েছে।  এর মধ্যে অসহায়, দরিদ্র, চলার সামর্থ্য নেই এমন ৬২ পরিবারকে আমরা সহযোগিতা দিয়েছি এবং এ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।

Share this post

scroll to top